শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশের সহজ জয়

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২১, ২৩:৩২

স্পোর্টস ডেস্ক

আট নম্বরে নেমে একটু শঙ্কা ধরিয়ে দিয়েছিল ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা, সাথে জুটি বেঁধেছিল নয় নম্বরে নামা ইসুরু উদানা। দু’জনে করে ফেলেছিল ৬২ রানের জুটি। এই জুটির শঙ্কাটা কাটে সাইফউদ্দিনের বুদ্ধিমত্তা পেস বলে। ৭৪ রান করা হাসারাঙ্গাকে থামান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

এর আগে হাসারাঙ্গা একবার ক্যাচ দিয়েছিল। সাকিব আল হাসানের বলটা ব্যাটে লাগাতে পারেননি হাসারাঙ্গা, মিড উইকেটে ক্যাচ ওঠে। বাউন্ডারি সীমানা থেকে কিছুটা ভেতরের দিকে দৌড়ে এসে চেষ্টা করেছিলেন লিটন দাস, কিন্তু ক্যাচটা ধরতে পারেননি। হাসারাঙ্গার রান তখন ৪৬ বলে ৬৩! সাকিবের ওই বলের আগে শ্রীলঙ্কার জয়ের সমীকরণ ছিল—৫৮ বলে দরকার ৬৬ রান।

৪১তম ওভারের তৃতীয় বলে হাসারাঙ্গার এই ক্যাচ হাতছাড়া হওয়া বাংলাদেশের মাথাব্যথা বাড়ানোরই কথা। সেই ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে ১৪৯ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা, এরপর যে উইকেটে গেঁড়ে বসেছিলেন হাসারাঙ্গা ও ইসুরু উদানা। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার রান ২০০-ও পেরিয়ে গিয়েছিল।

তখন সেই স্বস্তিটাই দিলেন শ্রীলঙ্কার সপ্তম উইকেটটি নেওয়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪৪তম ওভারের শেষ বলে হাসারাঙ্গাকে আফিফের ক্যাচ বানান সাইফউদ্দিন। ৬০ বলে ৩ চার ৫ ছক্কায় ৭৪ রান করেন হাসারাঙ্গা।

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

এর পরের ওভারে ওভারের প্রথম বলে উদানাকে ফেরান মোস্তাফিজ। ২৩ বলে ২ চারে ২১ রান করে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে তামিমদের আরও স্বস্তি ফেরান কাটার মাস্টার। তখন জয়টা নিশ্চিত ধরে নেওয়াই হয়েছিল। এরপর ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে দুষ্মন্ত চামিরাকেও ফিরিয়ে জয়টা নিশ্চিত করে দেন মোস্তাফিজুর রহমান।

রবিবার (২৩ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ সুপার লিগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২২৪ রানে অলআউট করে ৩৩ রানের সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

এই জয়ে ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের যেমন অবদান ছিল, তেমনি বল হাতে কব্জির ঘূর্ণিতে দুর্দান্ত অবদান রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ওভারে ২ মেডেন নিয়ে ৩০ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। মোস্তাফিজ ৩টি, সাইফউদ্দিন ২টি এবং সাকিব আল হাসান ১টি উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে দলের তিন সিনিয়র ব্যাটম্যান তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

তবে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় শতরান হওয়ার আগেই সাজঘরে ফিরেছিলেন সেরা চার ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে শতরানের জুটি ও জোড়া ফিফটি করে দলকে লড়াকু সংগ্রহে পৌঁছে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম।

তবে মুশফিকের ইনিংসটা আক্ষেপ হয়েই রইল রিভার্স সুইপের ফাঁদে পড়ে। নয়তো সেঞ্চুরিটা করে ফেলতেন। ৮৭ বলে ৪ চার ১ ছক্কায় ৮৪ রান করেছিলেন মুশফিক। সান্দাকানের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো উদানার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশফিক।

আর তারই সাথে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের ১০৯ রানের জুটি ভাঙ্গে। তখন মাহমুদউল্লাহর ৪৫ রান নিয়ে হাফসেঞ্চুরির কাছাকাছি। পরে সাইফুউদ্দিনকে নিয়ে হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৭৬ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ৫৪ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। এর আগে এই ধনঞ্জয়ার বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছিলেন তামিম ইকবাল। তবে হাফসেঞ্চুরি করেই ফিরেছিলেন দেশ সেরা ওপেনার। ৭০ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় ৫২ রান করেন তামিম।

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লঙ্কানদের হয়ে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৩টি এবং চামিরা, গুনাথিলাকা ও সান্দাকান ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম।

অবশেষে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের অষ্টম জয়। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ সুপার লিগে এটা তামিমদের চতুর্থ জয়। এই চার জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট হলো ৪০। বাকি দুই ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে যাবে। একই সঙ্গে এই প্রথমবারের মত সিরিজ জিতবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত