ইন্টার্নদের কর্মবিরতিতে ধুঁকছেন রামেক হাসপাতালের রোগীরা

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০১৭, ১৭:৩৮

রাজশাহী ব্যুরো

প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা নিয়ে শনিবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হাফিজুর রহমান রাজু (২৬)। ওয়ার্ডের ভেতরে উৎকট দুর্গন্ধ। তাই ওয়ার্ড কিংবা ওয়ার্ডের বারান্দা ছেড়ে চলাচলের প্রধান পথে বিছানা পেতে শুয়েছিলেন তিনি। রবিবার দুপুরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় তার সঙ্গে।

রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল এলাকার বাসিন্দা রাজু বলেন, ‘কাল রাতে এসেছি। তারপর রাতেই একটা স্যালাইন আর কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন ডাক্তার। সেগুলো কিনে আনার পর স্যালাইনটা লাগিয়ে দিয়েছেন নার্স। কিন্তু এখন পর্যন্ত আর কোনো ডাক্তারের মুখ দেখা যায়নি।’

রাজশাহী মহানগরীর নওহাটা এলাকার ইকবাল হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অর্থোপেডিক ও সার্জারি বিভাগের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। ইকবাল জানান, তার পায়ের প্লাস্টার রবিবার খোলার কথা ছিল। এরপর আবার এক্স-রে করা হতো। কিন্তু ইন্টার্নরা না থাকায় এসবের কিছুই হয়নি।

ভর্তি থেকেও চিকিৎসা না হওয়ায় জেলার বাগমারা উপজেলার বীরকোয়া গ্রামের বৃদ্ধ হারান উদ্দীনকে (৭০) হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার স্বজনরা। নাতি ইকবাল হোসেন (২৫) জানালেন, ওয়ার্ডে থাকলে রোগির ধুকে ধুকে মৃত্যু দেখতে হবে। কাল থেকে ইন্টার্নরা ওয়ার্ডে যাননি। একজন চিকিৎসককে ওয়ার্ডে পাওয়া গেলেও তিনি সব রোগিকে সময় দিতে পারছেন না। তাই রোগি নিয়ে ক্লিনিকের পথ ধরেছেন তারা।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তি দেওয়ার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এতে একাত্মতা ঘোষণা করে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রামেক হাসপতালের ইন্টার্নরাও কর্মবিরতিতে গেছেন। এ অবস্থায় রবিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবার এমন চিত্র দেখা গেল।

রামেক হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের মুখপাত্র রায়হান শরীফ জানান, শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মবিরতি আগামি মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে তারা কাজে ফিরবেন। তা না হলে সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মবিরতি আরও বাড়তে পারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত