‘ধ্বংসাত্মক’ নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১৪:২৬

সাহস ডেস্ক

রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন। এমন নিষেধাজ্ঞা যেন তা অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে এবং রুশদের বাধ্য করে যুদ্ধ বন্ধ করতে। যুদ্ধাপরাধ হিসেবে পশ্চিমাদের নিন্দা সত্ত্বেও কিছু দেশ বেসামরিক হত্যার জন্য শাস্তির চেয়ে এখনও টাকাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে কিইভ।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ভোররাতে ভলোদিমির জেলেনস্কি দৈনিক ভিডিও ভাষণে বলেছেন, রাশিয়ার তেল গণতান্ত্রিক বিশ্বকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। রুশ ব্যাংকগুলোকে আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি ব্লক করে দিতে হবে।

ইউক্রেনের বুচা শহরে বেসামরিকদের লাশ পড়ে থাকার বিভিন্ন ছবি আন্তর্জাতিক নিন্দার কারণ হওয়ার পর জেলেনস্কি বলেছেন, নিজেদের নৃশংসতার প্রমাণ ঢাকার চেষ্টা করছে রাশিয়ার বাহিনীগুলো।

কোনো তথ্য প্রমাণ না দিয়েই জেলেনস্কি বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের কৌশল পরিবর্তন করে রাস্তায় ও বেসমেন্টে যাদের হত্যা করেছে তাদের সরানোর চেষ্টা করছে। এটি শুধু প্রমাণ ঢাকার একটি চেষ্টা আর কিছু নয়। খবর- বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অপরদিকে মস্কো বেসামরিকদের লক্ষ্য বানানোর কথা অস্বীকার করে বলেছে, বুচার মৃতদেহের ছবিগুলো সাজানো যা মস্কোর বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপকে বৈধ্যতা দিতে ও শান্তি আলোচনাকে লাইনচ্যুত করতে করা হয়েছে। রাশিয়ার কথিত 'বিশেষ সামরিক অভিযান' এর ছয় সপ্তাহে ইউক্রেন থেকে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে, আরও কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে আর দেশটির এক চতুর্থাংশ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। যুদ্ধে ইউক্রেনের শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর জেরে রাশিয়ার অর্থনীতি ও দেশটির অভিজাত শ্রেণির ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্র বুধবার (৬ এপ্রিল) রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যাসহ দেশটির স্বিয়ারব্যাংক ও দেশটিতে মার্কিন বিনিয়োগের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।

রাশিয়াকে বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর ফোরাম জি২০ থেকেও বহিষ্কার করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় হতে যাওয়া জি২০ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধিরা যদি কোনো বৈঠকে থাকে সেগুলো বয়কট করবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়েরমাক বুধবার রাতে বলেছেন, তাদের মিত্রদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।

তিনি বলেন, এই ভয়ানক যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অবশ্যই এমন ধ্বংসাত্মক হতে হবে যেন তা আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়"। "আমার লক্ষ্য হল, রাশিয়ার প্রযুক্তি, সরঞ্জাম, খনিজ এবং আকরিক, বিরল মৃত্তিকার সরবরাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আর এইভাবে দেশটির অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করা।"

এর আগে জেলেনস্কি কিছু পশ্চিমা দেশের সমালোচনা করে আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টে সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের একমাত্র যে বিষয়টির অভাব রয়েছে তা হল কিছু নেতার নীতিগত ধরন, যারা এখনও মনে করেন যুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ আর্থিক ক্ষতির মতো ভয়ানক কিছু নয়।

বুধবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করতে ব্যর্থ হয় ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) কূটনীতিকেরা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার কয়লার ওপর নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান চুক্তিগুলোতে প্রভাব ফেলবে কি না, এ ধরনের কিছু ইস্যু পরিষ্কার করার প্রয়োজন রয়েছে।

ইইউয়ের সদস্য দেশ হাঙ্গেরি জানিয়েছে, রাশিয়ার গ্যাসের মূল্য রুবলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। দেশটির এ সিদ্ধান্ত ইইউয়ের বাকি দেশগুলোর অবস্থানের বিপরীত আর এতে রাশিয়ার জ্বালানীর ওপর ইউরোপের নির্ভরশীলতার বিষয়টিই ফুটে উঠেছে। এ নির্ভরতার কারণেই ইইউ মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া থেকে এখন অব্ধি বিরত রয়েছে।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত