আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২১, ২১:০৩
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আজ রোমাঞ্চকর অঘোষিত ফাইনাল ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী লিমিডেট।
শনিবরা (২৬ জুন) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংককে ৮ রানে হারিয়েছে টানা তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে আবাহনী। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি চতুর্থ শিরোপা, এবং সবমিলিয়ে ঢাকার শীর্ষ ক্লাব ক্রিকেটে দলটির এটি ২১তম শিরোপা।
তবে দুই দলের পয়েন্টের দিক থেকে এই ম্যাচটি এমনি দাঁড়িয়েছিল যে, যে জিতবে সেই চ্যাম্পিয়ন। এমন সমিকরণের ম্যাচটি বানিয়ে দিয়েছিল লিগের অলিখিত ফাইনাল ম্যাচ। এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে আবাহনী।
মোসাদ্দেক হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত
১৫১ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান করতে সক্ষম হয় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। তবে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচটি খেললে হয়তো জিততে পারতো প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু সেই কাজটি কেউ করতে পারেনি। টপ অর্ডারে রুবেল মিয়াকে ছাড়া আর সবাই ছিল যাওয়া আসায় ব্যস্ত। তবে লোয়ার অর্ডারে গিয়ে ধরেছিলেন অলক কপালি। তার জাদুতেই ম্যাচটি শেষ ওভারে নিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক।
প্রাইম ব্যাংকের জিততে শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। এদিকে আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন শেষ ওভারটি তুলে দেন শহিদুল ইসলামের হাতে। শেষ ওভারটি হাতে তুলে এক আকাশ চিন্তা নিয়ে দারুন ফিনিসিং দিয়েছে শহিদুল। শেষ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৭ রান। আর এতেই ৮ রানের জয় তুলে নেয় আবাহনী।
এমন সময় শহিদুলকে বল দেয়াটা একটা কঠিন ব্যাপার ছিল। শহিদুল বল করার আগে হয়তো অনেকে অনেক কিছু ভেবেছে। কিন্তু আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ভুল করেননি। মোসাদ্দেকের সিদ্ধান্তটাকে সফল করেছেন শহিদুল ইসলাম। যদিও শেষ ওভারে দলকে জেতানোর অভিজ্ঞতা আগেও ছিল শহিদুলের। গত বছর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির ফাইনালেও শেষ ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের। কিন্তু জেমকন খুলনার বোলার শহিদুল সে রান করতে দেননি গাজী গ্রুপকে।
তবে তারুণ্যে ঠাসা আবাহনীর ক্রিকেটারদের মধ্যে শিরোপা জয়ের উন্মাদনাটা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনেরই বেশি ছিল। ব্যাট-বল হাতে ম্যাচটা ঘুরিয়েই দিয়েছেন তিনি। ম্যান অব দ্য ম্যাচও সাইফউদ্দিন। নাজমুল হোসেন শান্ত ৪৫ এবং মুশফিকুর রহিমের পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মোসাদ্দে হোসেন করেছেন ৪০ রান। এরপর সাইফউদ্দিন লোয়ার অর্ডারে নেমে ১৩ বলে ২১ রান যোগ করলে আবাহনীর রান চলে যায় দেড়শতে।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন
আবার বল হাতেও দেখিয়েছেন চমক। কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছেন প্রাইম ব্যাংককে। ৪ ওভার করে ৩৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। ব্যাটে ২১ রান ও বলে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তিনি। আবার পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে নিজের আলো ছড়িয়ে টুর্নামেন্ট সেরাও হয়েছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড- ১৫০/৭ (নাজমুল হাসান শান্ত ৪০ বলে ৪৫ রান, মোসাদ্দেক হোসেন ৩৯ বলে ৪০ রান এবং অপরাজিত মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১৩ বলে ২১ রান)। প্রাইম ব্যাংককের হয়ে রুবেল হোসেন ২টি, মোস্তাফিজ, নাহিদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও রুবেল মিয়া ১টি করে উইকেট নেন।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব- ১৪৭/৯ (রুবেল মিয়া ৪৩ বলে ৪১ রান, অলক কাপালি ১৭ বলে ৩৪ রান এবং নাঈম হাসান ১৮ বলে ১৯ রান)। আবাহনীর হয়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪টি, মেহেদী হাসান রানা ২টি এবং আরাফাত সানি ও তানজিম হাসান সাকিব ১টি করে উইকেট নেন।
ম্যাচ সেরা ও টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।