করোনা রোগীর সংখ্যা শনাক্তের চেয়ে বহু গুণ বেশি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৯

সাহস ডেস্ক

করোনার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শনাক্তের চেয়ে আরো বহু গুণ বেশি বলে মন্তব্য করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সবাই পরীক্ষা করাচ্ছে না। অমিক্রন 'মৃদু' বলে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করছে।

রবিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে মহাখালীতে বিসিপিএস অডিটোরিয়ামে কোভিড-১৯ এর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে হয়তো আক্রান্তের সংখ্যা আরো বেশি হবে। কারণ সবাই পরীক্ষা করায় না। ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক পরীক্ষা করছে যার কারণে আমরা বুঝতে পারছি। আক্রান্তের সংখ্যা আমি মনে করি আরো বহু গুণে বেশি।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছি, সে ঘোরার কারণে আমরা অন্যদেরো সংক্রমিত করছি। স্বাস্থ্যবিধি মানা, নিজেকে সুরক্ষিত করা, পরিবারকে সুরক্ষিত করা, দেশের সকলকে সুরক্ষিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি, কক্সবাজারে যাচ্ছে, বাণিজ্য মেলায় যাচ্ছে, বিয়ে হচ্ছে, কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। তাহলে তো সংক্রমণের হার বাড়বেই! দপ্তরগুলো অর্ধেক লোকবল দিয়ে চালানোর কথা বলেছি, অথচ বাইরে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি, মাস্ক পরছি না। আমরা টিকা দিচ্ছি, মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। আমাদের সব কর্মসূচি সফল হবে যদি জনগণ সাহায্য করে। জনগণ এগিয়ে আসে, স্বাস্থ্যবিধি মানে। জনগণ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে আমরা সংক্রমণ-মৃত্যুর হার কমাতে পারবো না। অমিক্রন মৃদু বলে উড়িয়ে দিলে চলবে না। যেখানে ৪-৫ জনের মৃত্যু হতো এখন ২০ জনের মৃত্যু হচ্ছে। মেলা, কক্সবাজারে দেখি বাচ্চাদের নিয়ে যাচ্ছে। স্কুল বন্ধ এদিকে, আর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছে। এই জিনিসটা কিন্তু দুঃখজনক। অভিভাবকদের বলবো, এ বিষয়ে আপনারা খেয়াল করেন। বাচ্চারাও সংক্রমিত হচ্ছে। কাজেই তাদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

করোনায় আক্রান্তের হার প্রায় ২০ গুণ বেড়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে যেভাবে অমিক্রন ছড়িয়ে গেছে, বাংলাদেশেও ছড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছে, আগে ছিল মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০। অর্থাৎ আক্রান্তের হার প্রায় ২০ গুণ বেড়ে গেছে, এটা আশঙ্কাজনক। যেহেতু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে, মৃত্যুর হারও বাড়বে। এখন প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন গড়ে মৃত্যুবরণ করছে। আমরা বলে থাকি মৃদু কিন্তু সঠিক নয়। এ ধরনের মানসিকতা থাকলে সংক্রমণ বাড়বে, মৃত্যু বাড়বে। হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সংক্রমণ আমাদের কমিয়ে রাখতে হবে। লাগাম টেনে ধরে রাখতে হবে। না হলে আগামী দিনে মৃত্যুর হার আরো অনেক বাড়বে।

তিনি বলেন, যদি আক্রান্তের ১ শতাংশ মৃত্যু হয়, তাহলে কত হয়? বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি কোয়ার্টার শতাংশ হয় তাহলেও ৩০ জন প্রতিদিন মারা যাবে। অর্ধেক শতাংশ হয়, তাহলে ৬০-এর ঘরে চলে যাবে। কাজেই এটাকে হালকাভাবে উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। অমিক্রন আসার আগে আমাদের সারা দেশে হাসাপাতালে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী থাকতো বা তার চেয়েও কমে গিয়েছিল। এখন সেটা আড়াই থেকে ৩ হাজারে উঠে গেছে। যে হারে বাড়ছে, তাতে আমাদের হাসপাতালের শয্যা সংখ্যাগুলো শিগগির অকুপাইড হয়ে যাবে। আরো বেশি রোগী চলে আসবে এবং মৃত্যুর হারও বাড়তে থাকবে।

ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণেই বাংলাদেশে মৃত্যুর হার এত কম বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এক প্রশ্নে জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকারিভাবে টিকা তৈরি কাজ চলছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত