চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭ দিনের 'লকডাউন' ঘোষণা

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২১, ১৯:৪৫

করোনা প্রতিরোধে দেশে চলমান বিধিনিষেধ এর বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৭ দিনের 'লকডাউন' ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ২৪ মে (সোমবার) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, সোমবার (২৪ মে) দিবাগত রাত ১২.০১ মিনিট (মঙ্গলবার) থেকে আগামী ৩১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন কার্যকর হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী, পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব, সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পরপরই লকডাউন সংক্রান্ত ১১ দফা আদেশ জারি করে জেলা প্রশাসনের লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, জেলায় সম্প্রতি করোনা সংক্রমনের উর্ধমূখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত ১ সপ্তাহে সংক্রমণের হার শতকরা ৫০ শতাংশেরও বেশী যা দেশে যে হার তার ৫ গুন বেশী। এর উপর সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিঘ্রেশন পথে ভারত হতে বাংলাদেশীরা প্রবেশ করছেন। তাদের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করা হলেও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শংকা রয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশক্রমে জনগণকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এবং উর্ধতণ কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে লকডাউন ঘোষণা করা হল।

১১ দফা নির্দেশনা মোতাবেক লকডাউন চলাকালে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ থাকবে। এসময় পার্শ্ববর্তী জেলা রাজশাহী ও নওগাঁ থেকে কোন যানবাহন জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না ও জেলা থেকেও কোন যানবাহন জেলার বাইরে যাবে না। তবে এ্যাম্বুলেন্স, জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরী সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য নয়।

জেলায় সকল প্রকার দোকানপাট ও সাপ্তাহিক হাট বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের (মুদিখানা, ফার্মেসী) দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে প্রয়োজন ছাড়া এসব স্থানে কেউ যেতে বা জনসমাগম করতে পারবে না।

আমের আড়ৎ ও বাজার পৃথকস্থানে ছড়িয়ে আড়ৎদারের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে। বাগান থেকে ট্রাকে আম প্রেরণ করা যাবে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পরিবহন করা যাবে। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবে।

জরুরী প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়তে হবে। শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদেরও পরিবহনের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান নিবে।

আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরী পরিসেবা যেমন কৃষি উপকরণ, খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টীকাদান, বিদ্যূৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ারসার্ভিস, স্থলবন্দরসমূহের কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেটসেবা, গণমাধ্যম, ডাক, বে-সরকারী নিরাপত্তাসহ জরুরী ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে জড়িত অফিসসমূহ ও তাদের কর্মীরা ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। অতিজরুরী প্রয়োজন ব্যতীত (ঔসধ ও নিত্যদ্রব্য ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না।

খাবার দোকান ও রেস্তোঁরা থেকে কেবল খাবার সরবরাহ করা যাবে। খাবার কিনে নেয়া যাবে কিন্তু বসে খাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুম্মার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লী অংশ নিতে পারবেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত