করোনাভাইরাস: ভারতে মুসলিমদের ত্রাণ না দেয়ার শর্তারোপ

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২০, ২১:২২

সাহস ডেস্ক

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য দেশের মতো লকডাউ হয়ে গেছে ভারতবর্ষও। আর এই লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে পড়ছে মানুষ। তাই করোনা মোকাবেলায় অভুক্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটির সরকার। কিন্তু সরকারি তহবিলে অর্থ দেয়ার ক্ষেত্রে মুসলিমদের ত্রাণ না দেয়ার শর্তারোপ করেছেন ভারতের আসাম রাজ্যে গঠিত ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের প্রায় ডজনখানেক সদস্য।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তীব্র মুসলিমবিদ্বেষী এসব বিতর্কিত শর্ত জুড়ে দিয়েছেন তারা।

এতে বলা হয়, ‘এই অর্থ যেন তাবলিগ জামাত, জিহাদি বা জাহিল (অশিক্ষিত)-দের ত্রাণে না লাগে।’

আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালেই আপিল করতে হয়।

এই ট্রাইব্যুনালের সদস্যরা বিচারকের ক্ষমতাসম্পন্ন এবং তারাই স্থির করে থাকেন কার আপিল গৃহীত হবে।

প্রবল ক্ষমতাসম্পন্ন এসব ট্রাইব্যুনাল সদস্য কীভাবে প্রকাশ্যে এরকম মুসলিমবিদ্বেষী মন্তব্য করতে পারেন, তার বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছেন ভারতের বহু অ্যাক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী।

আসামের মানবাধিকার আইনজীবী আমন ওয়াদুদ বিবিসিকে বলেন, ‘এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ মানসিকতার লোকজনের ওপর কীভাবে নাগরিকত্বের ফয়সালা করার ভার ছেড়ে রাখা হয়েছে তা তো ভাবতেই পারি না।’

তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্ব হল সংবিধানে প্রদত্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। আর সেটা থাকবে কি না, তা ঠিক করছেন এমন লোকজন যারা প্রকাশ্যে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকজনকে জিহাদি বা জাহিল বলে গালিগালাজ করছেন।’

ওই চিঠিতে আসামের বিভিন্ন জেলার ১২ জন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল সদস্য সম্মিলিতভাবে ‘কোভিড-১৯ এর আক্রমণ থেকে মানবতাকে রক্ষা করতে’ যৌথভাবে ৬০ হাজার রুপিরও বেশি দান করার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু সেই সঙ্গেই তারা যোগ করেছেন, ‘আমাদের একটাই প্রার্থনা থাকবে, এই অর্থ দিয়ে যাতে তাবলিগ জামাত সদস্য, জিহাদি এবং জাহিলদের কোনও রকম সাহায্য না করা হয়।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত