অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

ভারতকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৩৯

সাহস ডেস্ক

অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে শক্তিশালি ভারতকে হারিয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়ে প্রথমবারের মত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।

৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রমের সেনওয়েজ পার্কে বৃষ্টির আইনে ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে টাইগার যুবারা।

এদিন প্রথমে ব্যাট করে ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রান করে অলআউট হয় ভারত। জবাবে ডার্ক লুইস পদ্ধতিতে ৪৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৪২.১ ওভারে ১৭০ রান করে বাংলাদেশ।

এদিন টসে জিতে আগে ভারতকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে টাইগার অধিনায়ক আকরব আলী। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান করতে সক্ষম হয় ভারতীয় যুবারা।

দলের হয়ে শুধুমাত্র জশভি জসওয়াল, তিলক ভার্মা ও ধ্রুব জুরেল ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি। কারণ শুরু থেকেই ভারতকে চেপে ধরে বাংলাদেশের বোলাররা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে জাসওয়াল এবং তিলক ভার্মা ৯৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের সামনে কিছুটা চোখ রাঙানি দিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয়দের সেই প্রতিরোধও ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের বোলারদের দৃঢ়তার সামনে।

তবে সর্বোচ্চ রান করা জশভি জসওয়ালই কেবল কিছুটা সমীহ আদায় করতে পেরেছে বাংলাদেশের বোলারদের কাছ থেকে। তাও বাংলাদেশের পেসার শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত পেস বোলিংয়ের সামনে সেঞ্চুরিটা করতে পারেননি। অবশেষে ১২১ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় ৮৮ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই বাহাঁতি ওপেনার।

এরপর ৬৫ বলে ৩ চারে ৩৮ রান করে সাকিবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওয়ানডাউনে নামা তিলক ভার্মা। পরে ৩৮ বলে ১ চারে ২২ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল।

টাইগারদের হয়ে অভিষেক দাস ৩টি, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব ২টি করে এবং রাকিবুল হাসান ১টি উইকেট নেন।

ভারতের দেওয়া ১৭৮ রানের জবাবে ব্যাট হাতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৮.৫ ওভারে দলীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান। কিন্তু এরপর ১৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

রবি বিশ্নয়ের ঘূর্ণিতে দ্রুত বিদায় নেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় (৮), তৌহিদ হৃদয় (০) ও শাহাদাত হোসেন। এর আগে তানজিদকে (১৭) আউট করে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিও ভাঙেন তিনি। দলের দুঃসময়ে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার ইমন।

৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছে তখন অধিনায়কের মতোই দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন আকবর। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি শামীম হোসেন (৭) ও অভিষেক দাস (৫)। পরে পুনরায় ব্যাট হাতে ফিরে আসেন ইমন।

আকবর-ইমনের ৪১ রানের জুটি ভাঙেন জসওয়াল। ৭৯ বলে ৭ চারে ৪৭ রান করে আকাশ সিংয়ের হাতে বন্দী হন ইমন। এরপর রাকিবুল হাসানকে নিয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন আকবর।

ধীরে ধীরে যখন বাংলাদেশ জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন ৪১তম ওভারে বৃষ্টি নেমে আসে। যুবা টাইগারদের রান তখন ৭ উইকেটে ১৬৩। ৫৪ বলে দরকার তখন মাত্র ১৫ রান। ডার্ক লুইস পদ্ধতিতে তখনও বাংলাদেশ ১৮ রানে এগিয়ে ছিল। 

বৃষ্টি শেষে পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ডিএল পদ্ধতিতে তখন যুব টাইগারদের দরকার হয় ৩০ বলে ৭ রান। সেই রান নিতে কোনো বেগ হতে হয়নি বাংলাদেশকে। আকবরের ৭৭ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ এবং রাকিবুলের ৯ রানের ইনিংসে ভর করে অনায়াসেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় যুবা টাইগাররা।

ভারতের হয়ে রবি বিশ্নয় ৪টি, সুশান্থ মিশরা ২টি এবং জশভি জসওয়াল ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন আকবর আলি। সিরিজ সেরা হয়েছেন জশভি জসওয়াল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত