সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আফগান পরীক্ষা

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৫৫

ওভাই ট্রাই-নেশন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে কাগজে কলমে আর পার্ফর্মেন্স বিবেচনায় সেরা দলের কথা আলোচনায় আসলে যে দল নিয়ে কথা বেশি হবে তা আফগানিস্তান। আর টুর্নামেন্টে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের সাথে অনুষ্ঠিত হওয়া একমাত্র টেস্ট ম্যাচে হারের ক্ষতটা এখনও দগদগেই আছে বাংলাদেশ দলে। মাঝে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারালেও আফগান জুজু কতটা থাকছে দলের মধ্যে তা নিয়ে একটা সন্দেহ তো থাকছেই। কেননা, জিম্বাবুয়ের সাথেও এসেছে কষ্টের জয়। সেদিন টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় হারার শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশ দল জিতেছে শেষের দিকে আফিফ হোসেন আর মোসাদ্দেক হোসেনের দৃঢ়তায়। আর টি-টোয়েন্টির কথা আসলে আফগানিস্তান তো একটা পোক্ত দলই। মানসিকভাবেও চাঙ্গা থাকবে তারাই। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়েকেও হারিয়েছে একদম বড় দলের মতই। এই দলের বিপক্ষে জয় পেতে হলে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বোলার আর টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদেরকে। 

নিল ম্যাকেঞ্জি, বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচের ভূমিকায় আছেন। আগের কোচিং স্টাফদের সবাইকে বিদায় দিলেও যাকে রেখে দিয়েছে বোর্ড। মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজকের ম্যাচ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সাথে। নিল ম্যাকেঞ্জি বলেন, আফগানিস্তানকে হারাতে সেরা ক্রিকেটটা খেলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন খেলোয়াড়রা। পরিকল্পনামতো খেলতে পারলে জয় নিয়ে মাঠ  ছাড়া কঠিন হবে না।

এই সংস্করণে বাংলাদেশের সাথে আফগানিস্তানের দেখা হয়েছে চারবার। প্রথম দেখা ২০১৪ সালে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সেবার বাংলাদেশের একমাত্র জয় এলেও এরপরে ভারতের দেরাদুনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের হাতেই ধবল ধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আজকের ম্যাচে জয় নিয়েই এই পরিসংখ্যানগুলো পাত্তা না দিয়ে টেস্ট হারের প্রতিশোধটাও নিতে চাইবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ যেখানে এই সংস্করণে ৮৬ ম্যাচ খেলে জিতেছে মাত্র ২৭ ম্যাচ সেখানে আফগানরা ৭১ ম্যাচ খেলে ৪৯ ম্যাচে জয়ের হাসি হেসেছে। আর র‍্যাংকিংয়ের কথা এলেও আফগানরাই এগিয়ে আছে ঢের। অবশ্য অন্য দিক থেকে দেখলে আফগানদের জয়গুলো এসেছে হংকং, ওমান, আরব আমিরাত, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড আর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে তাদের আত্মবিশ্বাস হলো টানা দশ ম্যাচে জয়ের ধারায় থাকা। এদিকে টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভালো কিছু রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল, নিধাহাস ট্রফির ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে দলটার। আর গত বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এওয়ে সিরিজ জেতার স্মৃতিতো খুব পুরনো নয়।

নিল ম্যাকেঞ্জি বললেন, 'বাংলাদেশ দেশের মাটিতে খেলছে। হোমে খুবই ভালো রেকর্ড তাদের। এমনকি বিদেশেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলছে কয়েক বছর ধরে। আমরা যদি ঠিকভাবে খেলতে পারি তাহলে প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের সম্ভাবনা থাকবে। যে সময় খারাপ খেলে তার জন্য আমরাই দায়ী। পুরো দেশের মানুষই খেলোয়াড়দের ওপর মানসিক চাপে ফেলে। যেটা হওয়ার হয়েছে। কাল (আজ) আমরা শতভাগ দিয়ে ইতিবাচক এবং ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলব ও জিতব।'

ব্যাটিং অর্ডার খুব একটা বদলানোর সম্ভাবনা না থাকলেও আফগান বোলারদের খেলতে ঘাম ঝরাতেই হবে বাংলাদেশকে। আর এই শুরুটা এনে দিতে পারেন সৌম্য আর লিটন দাসই। দল যে তাদের উপর আস্থা রাখবে তা ভালো ভাবেই বলা যায়। মিডল অর্ডারে সাকিব-মুশফিকের সাথে আফিফ উপরে উঠে আসলেও খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না হয়তো। আর শেষের দিকে কিছুটা দ্রুত রান তোলার দায়িত্ব থাকতে পারে মাহমুদুল্লাহ, সাব্বির, মোসাদ্দেক আর সাইফুদ্দীনের হাতে।

ব্যাট হাতে আফগান ব্যাটসম্যানরাও কম যাননা। টি-টোয়েন্টির বেশ কয়েকজন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আছে আফগান দলে। তাদের মোকাবেলায় জায়গা মত বল করার পাশাপাশি আতংকের সৃষ্টিও করতে হবে। বল হাতে শক্তি বাড়াতে দলে ডাকা হয়েছে পেসার আবু হায়দার রনিকে।

পরিকল্পনা যতই হোক মাঠের খেলাতেই তা উজাড় করে দিতে হবে। তা না হলে সবই ফিকে হয়ে যেতেই পারে। তবে আজ কোনো ভুল হবে না তা আশা করাই যায়। এ যে সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। ভালো তো খেলতেই হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত