জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান মিয়ানমারে যাবেন

প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:৩৯

সাহস ডেস্ক

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান মিয়ানমারে বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে জন্য মিয়ানমার যাবেন। বর্তমানে আনান রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিয়ে এক সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ায় আছেন। 

বুধবার(৩০ নভেম্বর)সকালে ইয়াঙ্গুনে যাবেন তিনি। এরপর তাঁর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশ সফরের কথা রয়েছে। 

বিবিসি বাংলা এক খবরে জানিয়েছে, জাতিসংঘের সাবেক এই মহাসচিব দেশটির সরকারের রোহিঙ্গা সম্পর্কিত নতুন আন্তর্জাতিক কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ ছাড়া এমন এক সময়ে মিয়ানমার সফর করছেন, যখন দেশটিতে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের কারণে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান তাঁদের ঘরবাড়ি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন বা আশ্রয়ের চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাঁদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।
রাখাইন রাজ্যে সংঘাত কীভাবে বন্ধ করা যায় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু মুসলমানদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য মিয়ানমার সরকারকে পরামর্শ দেবেন কফি আনান।

বিবিসির খবর অনুযায়ী, মূলত মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির আগ্রহে কফি আনানকে এ কমিশনের প্রধান করা হয়েছে।

এদিকে, কফি আনানের মিয়ানমারের বৌদ্ধ ও মুসলমানদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের এ চেষ্টার মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থান করা জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মূল করতে চায়। এ ছাড়া কফি আনানের এ কাজে সফলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মিয়ানমারেও। কারণ, দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগণ আনানের নেতৃত্বে কমিশনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

প্রায় চার মাস আগে কফি আনানকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক এ কমিশনের প্রধান করা হয়। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। তবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অভিযোগ, এবারের সেনা দমন-পীড়ন অতীতের যেকোনো মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ অফিসের কর্মকর্তা জন ম্যাককিসিক মন্তব্য করেছিলেন, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্মূল করতে চায়।

এদিকে মিয়ানমারের সরকার বলছে, কয়েকটি পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিহত হওয়ার পর তারা এ অভিযান চালাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করছে মিয়ানমারের সরকার।

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার ও নিপীড়নের অভিযোগ সত্ত্বেও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নীরবতার কারণে অনেকে তাঁর সমালোচনা করছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত