প্রস্তুতিতে এমন হার বিশ্বকাপে চিন্তায় ফেলবে বাংলাদেশকে

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৮:৪৭

সাহস ডেস্ক

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এশিয়া কাপের পর ত্রিদেশীয় সিরিজেও ছন্দহীন ছিল বাংলাদেশ। হারের বৃত্তেই যেন ঘুরপাক খাচ্ছে টাইগাররা। বিশ্বকাপের মূল পর্বের আগে প্রস্তুতিতেও নিজেদের ভিত গড়তে পারেনি। হারল আফগানিস্তানের কাছে। লড়াইটুকুও জমাতে পারলনা সাকিবের দল। সোমবার (১৭ অক্টোবর) ব্রিসবেনের অ্যালান বোর্ডার মাঠে নিজেদের প্রথম ওয়ার্ম আপ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৬২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।

এদিন টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে স্রেফ ৯৮ রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের দেয়া ১৬১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। চোটের কারণে লিটন দাস না থাকায় নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ওপেনিং করতে পাঠানো হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। একাদশ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে টিকেছিলেন তিনি। তবে তার ব্যাটিং তৈরি করেছে বিস্তর প্রশ্ন। ২০ ওভারের মার-কাটারি ক্রিকেটে মিরাজ ৩১ বল খুইয়ে আউট হন ১৬ রান করে! মিরাজের আউটের আগেই অবশ্য আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিল শান্ত-সাকিবরা। এতে ধসে পরে বাংলাদেশের ইনিংস। মাত্র ২৮ রানেই পড়ে যায় ৫ উইকেট। উইকেট পতনের শুরু শান্তকে দিয়ে। বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকির বলে বোল্ড হয়ে যান ৯ বলে ২ চারে ১২ রান করা শান্ত। তিনে নেমে সৌম্য সরকার টিকেছেন মাত্র ৪ বল, করেছেন ১ রান। তাকে ফেরান অফ স্পিনার মুজিব উর রহমান।

ফারুকি পর পর দুই বলে আউট করে দেন সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেনকে। ১ রান করে বোল্ড হন সাকিব আল হাসান ও শূন্য রানে এলবিডব্লিউ হন আফিফ হোসেন। ছয়ে নামা ইয়াসির আলিও ব্যর্থ। ফারুকির বলে পুল করে উড়াতে পারেননি। টপ এজ হয়ে দেন সহজ ক্যাচ। চরম বিপর্যস্ত দলকে উদ্ধারে জুটির চেষ্টায় ছিলেন মিরাজ ও নুরুল হাসান সোহান। তবে টি-টোয়েন্টির চাহিদার ধারেকাছেও ছিলেন না মিরাজ। একের পর এক ডট খেলেছেন, উইকেট আগলে পড়ে থাকাই করেছেন লক্ষ্য। তাতেও অবশ্য লাভ হয়নি। জুটিতে ১৮ রান যোগ করার পর নুরুল হাসান ফেরেন ফরিদ আহমেদের বলে। লফটেড কাভার ড্রাইভ করতে গিয়ে পার করতে পারেননি সীমানা, ৮ বলে ১৩ করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। এরপরই নাবিন উল হকের বল এগিয়ে এসে এলোপাথাড়ি উড়াতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন সংগ্রামরত মিরাজ। এসময় ৪৭ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ৩৩ বলে ২৯ রানে ইনিংস কিছুটা ব্যবধান কমাতে পারে। কিন্তু বড় হার এড়াতে পারেনি।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করে আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশকে ভাল শুরু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। চতুর্থ ওভারে ১৬ বলে ১৫ রান করা হজরতুল্লাহ জাজাইকে ফেরান তিনি। রাহমানুল্লাহ গুরবাজ তেতে ছিলেন। তার ১৯ বলে ২৭ রানের ছোট ঝড় থামে সাকিবের বলে। এরপর ১২ রান করা দারউইশ রাসুলকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। আর নাজিবুল্লাহ জাদরান ৫ রান করে আউট হন হাসান মাহমুদের বলে। তবে আফগানিস্তানের দেড় শ ছাড়ানোর মূল কৃতিত্ব ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নবির। ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন জাদরান আর নবির ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৪১ রান। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৬০ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।

বাংলাদেশ দলের সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ। ৩০ রান খরচায় নিয়েছেন ৩ উইকেট। মাঝের ওভারে দারুণ বল করেছেন হাসান মাহমুদ। মাত্র ২৪ রান দিয়ে আউট করেন জাদরান ইব্রাহিম ও নাজিবুল্লাহকে। সাকিব আল হাসানও নিয়েছেন দুটি উইকেট। প্রস্তুতি ম্যাচে হার-জিত বড় কথা নয়। কিন্তু খেলার ধরণ, বিবর্ণ পারফরম্যান্স বিশ্বকাপে নামার আগে বাংলাদেশকে গভীর চিন্তাতেই ফেলার কথা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত