হঠাৎ কেনো সিদ্ধান্ত বদলালেন মেসি?

বার্সেলোনা ছাড়ছেন মেসি! এমন গুঞ্জন চাউর হতেই ফুটবল পাড়ায় চলছিল নানা জল্পনা-কল্পনা। এ মৌসুমে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন মেসি, যেতে চেয়েছিলেন অন্য কোনো ক্লাবে। তবে সব গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিলেন বিশ্বসেরা তারকা নিজেই। বললেন, ‘আরও এক বছর বার্সায়ই থাকছি আমি।’

কিন্তু হঠাৎ করেই কেনো সিদ্ধান্ত বদলে, নিজের মতের বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে আসন্ন মৌসুম বার্সায় থেকে যাচ্ছেন মেসি? এ প্রশ্নের জবাবে মেসি বলেন, ‘এখন আমি বাধ্য হয়ে খেলব এই মৌসুম (২০২০-২১)। না হয় আমাকে ক্লাব ছাড়তে ৭০০ মিলিয়ন রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করতে হবে, যেটা একেবারেই অসম্ভব বিষয়’

ফুটবলভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গোল ডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গত সপ্তাহদেড়েক ধরে চলমান ঘটনা ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে খোলামেলাই আলোচনা করেছেন মেসি। যেখানে জোসেফ মারিয়া বার্তেমেউর অধীনে বর্তমান বোর্ডকেও রীতিমতো প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তিনি।

২০২০-২১ মৌসুমে নতুন ক্লাবে যেতে হলে মেসি তথা তার নতুন দলকে পরিশোধ করতে হতো ৭০০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা)। যা বর্তমান সময়ে অসম্ভবই বলা চলে। তবে মেসির সামনে খোলা ছিলো আইনি লড়াইয়ের পথ। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে খেলা ক্লাবে বিপক্ষে আদালতে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু এটিই চাননি মেসি।

মেসি বলেন, ‘আমাকে এবং বার্সেলোনাকে জড়িয়ে অনেক মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা আমাকে ব্যথিত করে। তারা ভেবেছে আমি নিজের সুবিধার জন্য কোর্টে যাব। আমি এমনটা কখনও করব না। কারণ আমি বার্সাকে ভালোবাসি।’

তিনি বলেন, ‘আমি কখনও বার্সার বিপক্ষে মামলায় যেতে চাই না। এই ক্লাব আমাকে সবকিছু দিয়েছে, যখন থেকে আমি এখানে এসেছি। বার্সা আমার জীবনের মতোই প্রিয় এবং এখানেই আমি আমাকে খুঁজে পেয়েছি। বার্সা আমাকে সবকিছু দিয়েছে আমিও বার্সাকে সবকিছু দিয়েছি। তাই আমার ক্লাবের বিপক্ষে আমার কোর্টে যাওয়ার চিন্তা কখনওই আসেনি।’

মেসি বলেন, ‘আমি বার্সাতেই থাকছি এবং আমি যতোই চলে যেতে চেয়েছিলাম না কেনো আমার মনোভাব আগের মতোই থাকবে। আমি আমার সর্বোচ্চটাই দিবো। আমি সবসময় জিততে চাই। আমি প্রতিযোগিতায় থাকতে পছন্দ করি এবং কখনও হারতে চাই না। আমি সবসময় ক্লাবের জন্য, ড্রেসিংরুমের জন্য এবং নিজের জন্য সেরাটাই চাই।’

বার্সা অধিনায়ক বলেন, ‘আমি একা অনুভব করিনি। কিছু মানুষ ছিলো যারা আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু ব্যাপার আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে। বার্সেলোনার প্রতি আমার দায়িত্ব-ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আমি এইরক‌ম প্রশ্ন আশা করিনি। তবে এটা আমাকে সত্যিকারের মানুষ চিনতে সাহায্য করেছে।’

মেসি আরও বলেন, ‘এই ফুটবল বিশ্ব অনেক কঠিন এবং এখানে অনেক মুখোশধারী মানুষ। এইসব কিছু আমাকে মুখোশের আড়ালের মানুষদের চিনিয়েছে। তবে ক্লাবের প্রতি আমার ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি যত দূরে যাই কিংবা থাকি ক্লাবের প্রতি আমার ভালোবাসা পাল্টাবে না।’