টেস্ট সিরিজটিও যদি ড্র করতে পারতো আরও ভালো লাগতো: নান্নু

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৫৬

সাহস ডেস্ক

স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন মুলুকে খেলতে নেমেই টি-টোয়েন্টিতেও সফলতা এনেছে বাংলাদেশ শিবির। ফ্লোরিডার লডারহিলে টানা দুই ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়দের হারিয়ে এই সিরিজটিও নিজেদের করে নিয়েছে সাকিব আল হাসান ও তার দল। অথচ কিছুদিন আগেও এই ফরম্যাটটিতেই টাইগাররা পুঁচকে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো।

কাজেই টি-টোয়েন্টিতে সবসময়ের বিস্ফোরক দলটির সঙ্গে সাকিবদের এমন বীররোচিত জয়ে দারুণ খুশি বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তবে তিনি আরও খুশি হতেন যদি টেস্ট সিরিজটি লাল-সবুজের দল ড্র করতে পারতো।

নান্নু বলেন, ‘ওয়ানডেতে জিতলাম, টি-টোয়েন্টিতেও জিতলাম, এজন্য ভাল লাগছে। টেস্টে ড্র করতে পারলে আরও ভালো লাগতো।’

বলা বাহুল্য দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের কাছে ইনিংস ও ২১৯ রানের ব্যবধানে হেরেছিলো সফরকারী বাংলাদেশ। এই টেস্টের প্রথম ইনিংসেই নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৪৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো সাকিব-তামিমরা। আর দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট কিছুটা লড়াইয়ে ফিরলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ১৬৬ রানে হার দিয়ে সাদা পোশাকের সিরিজের সমাপ্তি টানতে হয়েছে।

সন্দেহ নেই বিশ্ব ক্রি‌কে‌টে ক্রমাগত হুমকি হয়ে ওঠা দলটির এমন হতাশাব্যঞ্জক পারফরম্যান্সে নিরাশ হয়েছিলেন লাল সবুজের অযুত ভক্তরাও। তবে ওয়ানডেতে দিনবদলের দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজার বিচক্ষণ নেতৃত্বে সফরকারীদের সিরিজ জয়ে ছোট এ ব-দ্বীপের ভক্তদের সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিয়েছিলো।

ওয়ানডে শেষে তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টির প্রথমটিতে যখন সাকিবরা হেরে গেলেন তখন আবার শঙ্কার উদ্রেক হলো। দেশে ও দেশের বাহিরে দিনের পর দিন ধুঁকতে থাকা ফরম্যাটটিতে বুঝি আর জয় ধরা দেবে না! কিন্তু ফ্লোরিডার লডারহিলে দ্বিতীয় ম্যাচটিতে আচমকাই ঘুরে দাঁড়ালো স্টিভ রোডস কন্টিনজেন্ট। সাকিব-তামিমের দাপুটে ব্যাট ও মোস্তাফিজ-অপুর নান্দনিক বোলিংয়ে সিরিজ সমতা ফিরলো। আর তৃতীয় ম্যাচে লিটন দাসের ঝলসে ওঠা ব্যাট ও মোস্তাফিজের যাদুকরী স্পেলে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানের জয়ে শাপ মোচন হলো।

২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের পর দ্বিতীয়বারের মতো বিদেশের মটিতে একাধীক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের গৌরব লাভ করলো লাল-সবুজের দল।

নান্নু মনে করেন এই জয়ের পেছনে দলগত পারফরম্যান্সই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে, ‘এটা একটা টিম এফোর্ট ছিলো। সবারই সবজায়গায় একটু একটু করে অবদান ছিলো। তারপরেও আমি বলবো টি-টোয়েন্টিতে কিছু কিছু জায়গায় আমরা যথেষ্ট উন্নতি করেছি। আগে যেখানে ব্যাটিংয়ে ধস নামতো সেটা এই সিরিজে দেখা যায়নি। ওপেনার ও মিডল অর্ডারদের সময়উপযোগী জুটি, রান রোটেট করা, ১৬০ এর ওপরে রান করা, এসবই ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয়। এগুলো আগে দেখা যেত না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বোলিংটা ছিল বুদ্ধিমত্তায় ভরা। লাইন, লেংথ বজায় রেখে বোলিং করা, যেভাবে ফিল্ডিং সেট করা হয়েছে ওই জায়গায় বল করা। তো সবকিছুই দারুণ ছিলো।’

আর এই বিভাগে কাটার স্পেশালিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান তার চোখে অদ্বিতীয়, ‘ইনজুরি কাটিয়ে ও ভালো বল করেছে। সময়োপযোগী পারফরম্যান্স।’

০৬ আগস্ট (সোমবার) মোস্তাফিজ ৩.১ ওভার বল করে ৩১ রানের বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন ৩ উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানকে।

সিরিজটিতে টাইগাররা যে প্রভূত উন্নতি দেখিয়েছে সেটা সন্দেহাতীতভাবেই আগামীতে আরও ভালো করার সুস্পষ্ট  ইঙ্গিত বহন করছে। সিরিজ জয়ের দুই ম্যাচের দলীয় রান যথাক্রমে ১৭১ ও ১৮৪।ব্যাটসম্যানদের বড় রানের পার্টনারশিপ, বোলারদের নিখুঁত লাইন লেংথ এবং ফিল্ডিংয়ে ইতিবাচক বডি ল্যাংগুয়েজ বিগত দিনগুলোতে দেখা যায়নি।

আর এসব বিষয়ই ভবিষ্যতেও সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটটিতে টাইগারদের জয়ের ধারায় থাকতে উৎসাহ যোগাবে বলে বিশ্বাস করেন নান্নু, ‘অবশ্যই এগুলো আগামীর জন্য ভালো ইঙ্গিত। টি-টোয়েন্টিতে যেখানে আমরা সংগ্রাম করছিলাম সেখানে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের তাদের মাটিতে সিরিজ হারানো ভবিষ্যতে আরও ভালো করার উৎসাহ যোগাবে।’

সাহস২৪.কম/খান/মশিউর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত