দুঃসাহসী মংসাসী শিকারী প্রাণী বেজি

প্রকাশ : ৩০ মে ২০১৯, ০৩:৫৩

সাহস ডেস্ক
সংগৃহীত

বেজি বা নেউল (সংস্কৃত নকুল) হারপেস্টিডে গোত্রের শ্বাপদ (Herpestidae family of order Carnivora) মাংসাশী, স্থলচর স্তন্যপায়ী প্রাণী।আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া, দূরপ্রাচ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে এবং একটি প্রজাতি দক্ষিণ স্পেন অবধি বিস্তৃত। বেজি মরুভূমি, তৃণভূমি ও বনসহ নানা পরিবেশে বসবাসে অভ্যস্ত। চটপটে ও কৌশলী এই স্তন্যপায়ীদের শরীর ও মুখ লম্বা, পা খাটো, কান ছোট ও গোলাকার আর ঝোপালো লম্বা লেজ। লোম অমসৃণ ও কুঁচকানো। লেজসহ দেহদৈর্ঘ্য ৫০-১০০ সেমি, লেজ শরীরের সমান লম্বা।ওজন দেড়-দুই কেজি। গন্ধগোকুলের মতো এদের গন্ধগ্রন্থি নেই, পায়ু অঞ্চলে একটি বড় গন্ধথলে আছে। নিজ এলাকা শনাক্তিতে এরা গন্ধ ব্যবহার করে। 

অধিকাংশ প্রজাতিই নিঃসঙ্গ। লোমশ শরীর দ্রুত চলাচল করে। দিনের বেলায় খাবার সংগ্রহ করে রাতে মাটিতে নিজেদের তৈরীকৃত গর্তে বাস করে। শহরে ঝোপ ঝাড় বিশিষ্ট এলাকায় এবং গ্রামে দেখা যায়।

বেজিকে সাপের শত্রু বলে গণ্য করা হয়। বিষধর সাপকে যে প্রাণীটি চরম কুশলতায় ও ধূর্ততায় ক্লান্ত-শ্রান্ত-উদ্‌ভ্রান্ত করে মেরে ফেলে। পোষা কুকুর-বিড়ালকে যারা থোড়াই কেয়ার করে, চরম দুঃসাহসে দুটি প্রাণী মিলে রাজহাঁস পর্যন্ত মেরে ফেলতে পারে, শিকার করে একা, কখনও দুটিতে, দৈবাৎ সপরিবারে। এরা ছোটখাটো স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর ও সব ধরনের কীটপতঙ্গ ধরে থাকে। বেজিরা দৈবাৎ পাখির ডিম, মৃত জীব খেয়ে থাকে; কখনও ফলমূল এবং শহর ও গ্রামে হাঁস-মুরগিও ধরে খায়।

এদের সঙ্গে প্রায় সারা বছরই দু-তিনটি করে বাচ্চা দেখা যায়। উইয়ের ঢিবি, উঁচু জায়গাসহ সুবিধামতো জায়গায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বাচ্চা দেয়। মেয়ে বেজি একাই বাচ্চা লালন-পালন করে। প্রয়োজনে বাচ্চার ঘাড় কামড়ে ধরে স্থানান্তর করে।

সারা দেশেই আছে এরা, তবে সংখ্যায় খুবই কম বলে প্রজাতিটি বিপদগ্রস্ত। আবাসভূমি ধ্বংস ও ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে নিধনই বিপন্নতার কারণ। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, ইরাক এবং তুরস্কেও বেজি আছে।

তথ্যসূত্র-বাংলাপিডিয়া

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত