১৬তম বিজেএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না রাবির ১১৮ শিক্ষার্থী

প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:১৩

সাহস ডেস্ক

সঠিক সময়ে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় ১৬তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নিয়োগবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারছেন না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ১১৮ শিক্ষার্থী। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই শিক্ষার্থীদের ২০২১-এর ডিসেম্বরে স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।

বিভাগের গাফিলতির ফলেই এমনটা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের সময় মতো কোর্স শেষ না করা, পরীক্ষা কমিটির গাফিলতি, বিভাগীয় প্রধানের যথাযথ সদিচ্ছার অভাব, পরীক্ষার তারিখ বারবার পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণসহ বিভাগের সার্বিক অবহেলার কারণে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে অংশ নিতে পারবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি ও আমার বন্ধু একই সময়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার বন্ধু বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে এবং আমি রাবিতে। করোনার সময়ে আমরা একইসাথে বিজেএস পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। কিন্তু বিইউপি দ্রুত করোনাকালীন সেশনজট কাটিয়ে ওঠায় ও যেখানে ২০২২-এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছে সেখানে আমি ২০২৩-এর পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে পারবো না। এই বিষয়টি একজন শিক্ষার্থীর জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক।

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, শুধুমাত্র বিজেএস নয় সঠিক সময়ে পরীক্ষা শেষ না হওয়ায় আমরা একের পর এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মিস করছি যা আমাদের বেকারত্বের শঙ্কা বাড়িয়ে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। তবে বিজেএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সাফল্য থাকায় এই পরীক্ষার প্রতি আমাদের গুরুত্ব বেশি। যেহেতু বিজেএসের পরীক্ষা সাধারণত জুন-জুলাই মাসে হয় এবং এই বছর দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে তাই আমরা প্রত্যাশা করবো আমাদের প্রশাসন পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমার বিষয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সাথে কথা বলবে।

ইতোপূর্বের বিজেএস পরীক্ষাগুলোতে রাবি শিক্ষার্থীদের সাফল্যের উদাহরণ দিয়ে চতুর্থ বর্ষের অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, পরপর তিন বছর আমাদের বড় ভাই ও আপুরা অনার্সের পরীক্ষা দিয়েই বিজেএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। হয়তো আমরাও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারতাম। কিন্তু সেই সুযোগটাই পেলাম না। তিনবার পরীক্ষার সময়সূচি পাল্টানো হয়েছে। সঠিক সময়ে পরীক্ষাটা হলে আমরা পরীক্ষায় বসতে পারতাম।

এদিকে, শুধুমাত্র বিউপিই নয় দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদেরই স্নাতক সম্পন্ন হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অপেক্ষাকৃত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও।

এ বিষয়ে রাবির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল হান্নান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শিক্ষার্থীরা সবসময়ই বিজেএসে ভালো ফলাফল করে। এবছর তাদের কোর্সের সিলেবাস শেষ না হওয়ায় পরীক্ষায় বিলম্ব হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা চাইলে পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলা যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও আমার সাথে কোনো শিক্ষার্থী কথা বলেননি।

উল্লেখ্য, বিগত তিনটি বিজেএস পরীক্ষায়ই প্রথম স্থান অর্জনকারী ছিলেন রাবি শিক্ষার্থী। ১৫তম বিজিএস পরীক্ষায় আশিক-উজ-জামান, ১৪তম বিজেএস পরীক্ষায় সুমাইয়া নাসরিন শামা ও ১৩তম বিজেএস পরীক্ষায় শিউলী নাহার প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারা সবাই স্নাতক শেষ করেই আবেদন করেছিলেন এবং মাস্টার্স শেষ না করেই সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত