বিবাহিত ছাত্রীদের ঢাবি হলের সিট বাতিলের নিয়ম বাদ দিতে আইনি নোটিশ

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৩১

সাহস ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মেয়েদের হলে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীরা থাকতে পারবেন না এবং বিবাহিত হলে তা কর্তৃপক্ষকে না জানালে ছাত্রীর হলের সিট বাতিল হবে— এমন নিয়ম বাতিল চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে ‘নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি’ বাতিল না করলে উচ্চ আদালতে শরণাপন্ন হওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও শামসুন নাহার, কুয়েত-মৈত্রী ও সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর এই নোটিশ পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শিশির মনির এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার কারণে কতিপয় ছাত্রীর আবাসিক সিট বাতিল করা হয়েছে। শামসুন নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও অন্যান্য শৃঙ্খলামূলক নিয়মবিধির ১৬ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবে। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না।

উক্ত বিধানের কারণে কার্যত বিবাহিত ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) ও (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্ববস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবে। বিবাহিত ছাত্রীদের জন্যে এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে প্রতিবন্ধকতা এবং সংবিধানের ২৭ এবং ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।

নোটিশের শেষাংশে বলা হয়, অতএব, এই নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।

তবে নোটিশটি এখনো পাননি বলে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আমাদের মতো করে কাজ করে যাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত