বাবার কোলে শিশু হত্যা: রিমন বাহিনীর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা

প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩২

সাহস ডেস্ক

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সন্ত্রাসী রিমন বাহিনীর হামলায় গত ১৩ এপ্রিল বাবার কোলে থাকা শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত (৪) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। শিশু তাসফিয়ার মৃত্যুর পর প্রধান অভিযুক্ত মো. রিমন (২৫) ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা।

অভিযুক্ত রিমন, মহিন, সুজন, রহিম, বাদশাহ এবং আকবর এলাকার নানা অপকর্মের তথ্য জানিয়ে তাদের বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে শিশুটির লাশ নিয়ে চৌমুহনী-ফেনী সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায় স্থানীয়রা। তারা রিমন ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জসিম বলেন, শিশু জান্নাত হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত মো. রিমন কাউকে মানতো না। সে এলাকায় প্রকাশ্যে গাঁজা এবং ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করতো। স্কুলে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের ওড়না ধরে টান দিতো। ইচ্ছে করে মেয়েদের ল্যাং মেরে ফেলে দিতো, প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি করতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সব জানলেও অধিকাংশ সময় কোনো ব্যবস্থা নিতো না।

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য তাসলিমা আক্তার বলেন, রিমন, মহিন ও রহিমসহ ২০-২৫ জন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতো। এরা শিশু তাসফিয়ার হত্যাকারী।

এছারাও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, রিমন ও তার সহযোগীরা সরাসরি দলীয় কোনো পদ-পদবিতে নেই। তবে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। এ কারণে এলাকার মানুষজনও তাদের ভয়ে পেতো, মুখ খুলতো না।

হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আজিম মির্জা বলেন, হাজীপুর সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এখানে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক অত্যাধিক হারে বেড়ে গেছে। এলাকার চিহ্নিত অপরাধীরা প্রকাশ্যেই তাদের অপকর্ম করে বেড়ালেও, প্রশাসন অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ ও র‍্যাবকে দুদিন আগেও সন্ত্রাসী রিমন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অনুরোধ করেছি। তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার অভিযোগে আমলে নেননি।

তবে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি সম্প্রতি রিমনের বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেছেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করেনি। থানায় লিখিত কোনো অভিযোগও আসেনি। এছাড়া সন্ত্রাসীদের অবস্থান জানাতেও কেউ ফোন করেনি। তবে আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ওসি।

তিনি বলেন, রিমনের বিরুদ্ধে থানায় এর আগে আটটি মামলা আছে। আরও বলেন, ‘শিশু তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় ১৭ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত