উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৯, ১৪:০০

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশবাসী আমাদের ওপর আস্তা রেখে ভোট দিয়েছে। যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সারাদেশে উন্নয়নের মাধ্যমে তা রক্ষা করছি। সারাদেশে ব্রিজ, কালভার্ট, ওভারপাস, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, যেখানে যা কিছু প্রয়োজন আমরা সব করে দিচ্ছি। এ দেশের মানুষ যেন যাতায়াতে কষ্ট না পায় সে জন্যই আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি।’

শনিবার (২৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের যোগাযোগ নিবিঘ্ন করার জন্য সারাদেশে সড়ক, নৌ, রেল ও বিমান সচল করা হচ্ছে। সারাদেশেই সড়ক, রেল, নৌ ও বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ চলছে। যেভাবে সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন হচ্ছে তাতে ইনশাল্লাহ প্রত্যেক অঞ্চলের মানুষ কম সময়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে পারবে।’

তিনি বলেন, মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলছে। যদিও মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের জন্য ঢাকায় মানুষ একটু যানজটে কষ্ট পাচ্ছে। আমি বলবো আরও ভালোভাবে চলাচলের জন্য এই কষ্টটা একটু সহ্য করতে হবে। আশা করি এ কাজটা হয়ে গেলে আর কোনো কষ্ট থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এখানে ১৬টি স্টেশন থাকবে। মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। সেই ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য কাজ করছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক-রেল-নৌ পথে উন্নয়নের পাশাপাশি বিমানের উন্নয়নসহ আকাশ পথে যাতায়াত সহজ করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫’র ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে জাতির পিতাকে নির্মম ভাবে হত্যা হরা হয়। সেই হত্যার পরে বাংলাদেশের মানুষের যে অগ্রযাত্রা হওয়ার কথা ছিল বা স্বাধীন জাতি হিসেবে যে মর্যাদা পাওয়ার কথা ছিল বা দেশটা যতটা উন্নত হওয়ার কথা ছিল, সেটি হয়নি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। 

তিনি বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আর আওয়ামী লীগ সরকার আসার পরেই আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছি। এজন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা, যে তারা আমাদের উপর বিশ্বাস রেখেছেন, আস্থা রেখেছেন এবং আমাদের ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ হিসেবে গড়ে তোলার। তার আদর্শকে ধারণ করে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখছি। বাংলাদেশের মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি দেয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সড়ক পথের যে উন্নয়ন করেছি তাতে আগামী ঈদে কাউকে কষ্ট ভোগ করতে হবে না। নিবিঘ্নে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। আমরা সারাদেশে সড়ক যোগাযোগের যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি তা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখবে।’

এ জন্য জাপান সরকার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ কাজগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকায় মেট্রোরেল ফ্লাইওভারসহ নানা উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় ঢাকাবাসীকে এখন একটু কষ্ট পেতে হচ্ছে। একটু কষ্ট সহ্য করলে ভবিষ্যতে যাতায়াত আরও আরামদায়ক হবে।’

রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে যাত্রী সাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু গাড়িচালককে দোষ দেবেন না। ট্রাফিক আইন মেনে চলবেন। গাড়িচালক ও পথচারী কেউই যদি ট্রাফিক আইন না মানে তাহলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটবে।’

তিনি বলেন, ‘মহাসড়কগুলোতে চালকের বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা নেই। আমরা অদূর ভবিষ্যতে এ ব্যবস্থা এবং খাওয়া-দাওয়াসহ যেকোনো গাড়িচালক যাতে বিশ্রাম নিতে পারে সে ব্যবস্থা করে দেব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে আমাদের ছেলেমেয়েদের ধারণা দিতে হবে।’ স্কুলের সামনে যে সব জেব্রা ক্রসিং থাকে সেগুলো সম্পর্কে ধারণা নেয়ার জন্য তিনি ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স কুমিল্লা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের উপকার ভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আপনাদের চলাচল সহজ করার জন্যই আমাদের সরকার এ সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে হাত দিয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত