বৈশাখের সব অনুষ্ঠানস্থল ধূমপানমুক্ত রাখা হবে: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৪৩

সাহস ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বিকেল ৬টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপরেও যদি কেউ ইনডোরে অনুষ্ঠান করতে চান তাহলে বিধিনিষেধ নেই, সেসব স্থানে আমরা সাধ্যমতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো।

বৈশাখের সব অনুষ্ঠানস্থল ধূমপানমুক্ত রাখতে নিরাপত্তাকর্মীরা কাজ করবেন। শব্দদূষণ ও নারীদের উত্যক্তের মাধ্যম ভুভুজেলা এবারো নিষিদ্ধ থাকবে। ধূমপান করলে বা ভুভুজেলা ব্যবহার করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবার রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০০ মাইক স্থাপন করা হবে। মাইকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে যেকোন নির্দেশনা এবং তথ্য জানানো হবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।

সকল অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য উদযাপন নিশ্চিত করতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। বড় উৎসবস্থলগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে সমন্বিতভাবে নিরাপত্তার যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।

রমনা পার্ক এলাকায় কন্ট্রলরুম থাকবে, সেখান থেকে সার্বক্ষণিক সবকিছু মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। পুরো এলাকায় ওয়াচ টাওয়ার থেকে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজরদারি করা হবে। রমনা-সোহরাওয়ার্দী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক এলাকা পুরোটা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান আছাদুজ্জামান মিয়া।

রমনা পার্ক, হাতিরঝিল এলাকার জলাশয়ে নৌ টহল এবং উদ্ধারকারী ডুবুরি দল প্রস্তুত থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও মেডিকেল টিম তাদের অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রস্তুত থাকবে। যেকোন বিপদ দেখা দিলে, সে অনুযায়ী আমাদের ইভাকুয়েশন প্ল্যান রয়েছে, যোগ করেন ডিএমপি কমিশনার।

ইভটিজিং ও ছিনতাই প্রতিরোধে সাদা পোষাকে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। টহল ডিউটি, ফুট পেট্রোলিংয়ের সমন্বয়ে সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সকল দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালী চেকিংয়ের পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।

পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে চিরাচরিত রুটেই যাবে। পুরো পথে সিসিটিভি ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সামনে-পেছনে সোয়াট থাকবে এবং দুইপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। যারা শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন তারা চারুকলা থেকেই তালিকাভুক্ত হয়ে অংশ নেবেন, পথিমধ্যে কেউ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না।

যারা মুখোশ ব্যবহার করবেন তারা মুখে না পড়ে হাতে রাখতে পারবেন। যারা মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ ও বিভিন্ন সামগ্রী বহন করবেন চারুকলা থেকেই তাদের একটি তালিকা পুলিশকে দেওয়া হবে।

ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, আমরা মানুষকে নিরাপদে রাখতে রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকায় কেন্দ্রীয় রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে থাকি। এবারো এ ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।

দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সম্মানিত নগরবাসী পুলিশকে সহযোগিতা করে চেকিংয়ের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। এজন্য তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করছি এবারো নাগরিকরা তল্লাশিতে পুলিশকে সহায়তা করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোন দেশের দূতাবাস তাদের নগরিকদের কি নির্দেশনা দিলো, তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার তার সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা ও সকলের সহযোগিতায় পুলিশ সকল অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত