‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে প্রয়োজন সবার সহযোগিতা’

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০১৯, ১৮:৩৯

সাহস ডেস্ক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সবারই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। একই ভূমিকা পালন করতে হবে ভোটারদেরও। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় ভোটার দিবস পালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

শুক্রবার (১ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘জাতীয় ভোটার দিবস ২০১৯’পালন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে তৃণমূল পর্যায়ে যথাযথভাবে পালন করা হলে দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক সাড়া পাড়বে বলেও মনে করেন এ রাষ্ট্রপ্রধান।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এ লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তাহলে দেশে দোষারোপের রাজনীতির পরিবর্তে শান্তি, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও সহিঞ্চুতার রাজনীতি গড়ে উঠবে। গণতন্ত্র উন্নয়ন এগিয়ে যাবে, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।’

প্রথমবারের মতো পালিত জাতীয় ভোটার দিবসের প্রতিপাদ্য করা হয়েছে, ‘ভোটার হব, ভোট দেব।’ এ প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘তরুণদের ভোটার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

বিভিন্ন কারণে যেসব নাগরিক এখনও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে জাতীয় ভোটার দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘প্রাপ্ত বয়স্ক সব নাগরিকের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে নির্বাচন কমিশনকে বছরব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক, সিভিল সোসাইটির সদস্যরা, মসজিদের ইমামসহ সমাজের গণ্যমান্য সব ব্যক্তিকে এগিয়ে আসার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘জনগণের শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার তালিকার হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারপরও দুর্গম হাওর, চরাঞ্চল ও পাহাড়ী অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাচ্ছি,’ যোগ করেন আবদুল হামিদ।

প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি লোক প্রবাসে বসবাস করেন। তারা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। প্রবাসীরা যাতে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে পারেন, তার বিশেষ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এটা সম্ভব হলে প্রবাসীদের নাগরিকত্বসহ তাদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি সহজ হবে। তাছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। প্রবাসে অবস্থা করে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের প্রবাসী নাগরিকরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে। প্রবাসী বাঙালিরাও যাতে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়, এ বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে।’

নির্বাচন ব্যবস্থায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভোটার তালিকাভুক্তকরণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে বলেও জানান আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, ‘বায়োমেট্রিক ভিসা সমৃদ্ধ এনআইডি ডাটাবেজে সব ভোটারের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ গ্রহণ করা হয়েছে। আমি জেনে খুশি হয়েছি।’

এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত