তিস্তায় ধু ধু বালুচর, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:২১

আসাদুজ্জামান সাজু

রাজনৈতিক দলগুলো তিস্তা নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করেন। তিস্তা পাড়ে লংমার্চ হয়, তিস্তা ইস্যুকে আমলে নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ দর কষাকষিও হয়, কিন্তু পানি হয় না। তবে নদীর তলদেশ বালুতে ভরাট থাকায় সামান্য পানিতেই বন্যার দেখা মেলে। তিস্তা এখন পানির অভাবে শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।

ভারতের এক তরফা পানি নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা এখন মৃত প্রায়। ফলে তিস্তা অববাহিকায় জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। তিস্তা পাড়ের জেলে আর মাঝিদের নেই আর আগের মত কর্মব্যস্ততা। থমকে গেছে লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের হাজারো পরিবারের উপার্জন। প্রভাব পড়ছে কৃষি, মাছ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উপর।

ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে। তিস্তা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।

ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়ে চির চেনা তিস্তা আজ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। পানির অভাবে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে পাড়ের গাছপালা। তিস্তা পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও চলে গেছে অন্যত্র। তিস্তা নদীর উপর নির্মিত তিস্তা রেলসেতু, তিস্তা সড়ক সেতু ও গংগাচড়া শেখ হাসিনা সেতু যেন প্রহসনমূলক ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ধু ধু বালুচরের উপর। ব্রিজ থাকলেও হেঁটেই পার হচ্ছেন অনেকে। তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরের বালুতে ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষাবাদ হলেও সেচের অভাবে তা মারা যাচ্ছে।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আপাতত প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার কিউসেক পানি রয়েছে। যা সিলড্রাপ ও ক্যানেলগুলো ভরে রাখা হয়েছে। এর চেয়েও যদি পানি কমে যায় তবে সেচ প্রকল্প সচল রাখাই কষ্টকর হয়ে যাবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত