কেয়ারটেকারের হাতেই খুন সৈয়দপুরের দম্পতি

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:০৩

সাহস ডেস্ক

নীলফামারীর সৈয়দপুরে নিজের গবাদীপশুর খামারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী নজরুল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী-সালমা বেগম (৪৫) খুন হন।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলের দিকে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে খুনের কথা স্বীকার করেছেন খামারের কেয়ারটেকার আবদুর রাজ্জাক (৪০)।

পরে মঙ্গলবার রাতে সৈয়দপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল।

এ সময় সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান পাশা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সৈয়দপুর থানার ওসি (তদন্ত) আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর থেকে আবদুর রাজ্জাক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে দুপুরের দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত আবদুর রাজ্জাক নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

সৈয়দপুর থানার ওসি শাহজাহান পাশা জানান, গত ২৭ জানুয়ারি ভোর রাতে সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালুবাড়ি গ্রামে নিজের খামার বাড়িতে খামার মালিক শেখ নজরুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগমকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ সময় আহত হন ওই খামারের কেয়ারটেকার আবদুর রাজ্জাক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দম্পতির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়। এবং আহত কেয়ারটেকারকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কেয়ারটেকার আবদুর রাজ্জাকসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ঘটনার পরের দিন সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত দম্পতির ছেলে বড় ছেলে সোহেল রানা।

এ দিকে আদালতের কাছে কেয়ারটেকার তার জবাববন্দীতে বলেন, ভেড়া ও গরুর এই খামার প্রতিষ্ঠার পর হতে তিনি খামারে কর্মরত। খামারের মালিক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তাদরে ছেলেরা তার সঙ্গে কারণে-অকারণে খারাপ আচরণ করতো। ঠিত মতো বেতন প্রদান করতো না। রোগে আক্রান্ত হয়ে খামারের পশু মারা গেলে তার দাম বেতনের অংশ থেকে কেটে নেওয়া হতো। ছুটি চেয়ে বাড়ি যেতে চাইলে তারা ছুটিও দিতেন না।

ঘটনার দিন ২৬ জানুয়ারি রাতে বাড়ি যাবার জন্য খামারের মালিক নজরুল ইসলামের কাছে ৭ দিন ছুটি চাইলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। ওই রাতে খামারের একটি ভেড়া অসুস্থ হয়ে চিৎকার করতে থাকায় কেয়ারটেকার আবদুর রাজ্জাক খামারের মালিকের ঘরে গিয়ে তাদের ডাক দেন। এ সময় খামারের মালিকের স্ত্রী সালমা বেগম ঘুম থেকে উঠে গালমন্দ করে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এসময় হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করেন কেয়ারটেকার। তার চিৎকারে ঘর হতে ছুটে আসনে খামার মালিক নজরুল ইসলাম। তিনি স্ত্রীকে রক্তাক্ত দেখে কেয়ারটেকার রাজ্জাককে আঘাত করেন। পাল্টা আঘাতে খামার মালিক নজরুল ইসলামকেও হত্যা করেন আবদুর রাজ্জাক।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত