কৃষিজমির উর্বরতা ফেরাতে জৈব সারের গুরুত্ব
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২১, ১৪:২২
যে মাটিতে জৈব পদার্থ বেশি থাকবে সেই মাটির উৎপাদন খমতাও বেশি হয়। সুতরাং যথা সম্ভব অধিক হারে জৈব সারের ব্যবহার উচিৎ। এই জৈব সার মাটির অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের নিয়ন্ত্রণে বাফার হিসাবে কাজ করে এবং মাটির সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। এই জৈবসার মাটির ধাতব আয়ন সমূহকে ধরে রাখে ফলে ক্ষতিকারক কীটনাশকসমূহের প্রভাব থেকে মূল অংশটি সুরক্ষিত থাকে।
এছাড়া ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আবাস ও নগরায়নের প্রয়োজনে অবকাঠামো নিশ্চিত করতে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি। হিসেব অনুযায়ী, গত ১১ বছরে ২৬ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩১ একর কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়ায় কমে গেছে ধান চাষ। এ অবস্থায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন কৃষিজমির উৎকৃষ্ট ব্যবহার। সেক্ষেত্রে জৈব পদ্ধতিতে চাষ সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি আদর্শ জমিতে জৈব পদার্থের মাত্রা ৩.৫ শতাংশ থাকা বাঞ্ছনীয় হলেও এ দেশের বেশির ভাগ জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ১-১ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং কিছু কিছু জমিতে এর পরিমাণ ১ শতাংশের চেয়েও কম।
জৈব সার ব্যবহারের পর গাছের প্রয়োজন অনুযায়ি অনেকদিন ধরে গাছ খাদ্য উপাদান গ্রহন করতে পারে। জমিতে প্রয়োগের পর আনুমানিক ৬-১৮ মাস পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে যা পরবর্তি ফসলে কাজে লাগে।
জৈব সার ব্যবহারে মাটির উপকারী জিবানুর কার্য্যকলাপ বেড়ে যায় এবং এদের বংশ বিস্তারেও তা সহায়ক হয়।বেলে মাটি সরস হয়। তাছাড়া এঁটেল মাটিকে কিছুটা দোআঁশ মত করে ফসল উৎপাদনের অধিক উপযোগী করে তোলে।
এ সার গ্রিষ্মকালে মাটিতে তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় এবং শিতকালে মাটিকে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে। এতে সব ঋতুতেই গাছের শিকড় বৃদ্ধি পায়। এ সার মাটিতে রস মজুদ রাখতে সহায়তা করে। ফলে অধিক সেচের প্রয়োজন হয় না।
মাটিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের অধিক ব্যবহারের কোন বিষাক্ত পরিবেশের সৃষ্টি হলে জৈব সার তা কমাতে সাহায্য করে। জৈব সার বেশি ব্যবহারে মাটির কোন ক্ষতি হয় না। জৈব সার রাসায়নিক সারের কার্য্য কারিতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং জৈব সার ব্যবহার করলে আনুপাতিক হারে রাসায়নিক সারের মাত্রা কমান যায়। জৈব সার ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে গুনগত মান বাড়ায় এবং গুদাম জাত ও শস্য সংরক্ষনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
এই পদ্ধতির সুবিধা হলো, এতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় স্বল্পমাত্রায়৷ গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব বালাইনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল ও সবজির উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব৷
তথ্যসূত্র: dw.co, কৃষিবাজার, Breakingnews.com