একাদশ-দ্বাদশের পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন আসছে

প্রকাশ : ২১ মে ২০১৮, ১৪:৩০

সাহস ডেস্ক

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যবইয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাঠ্যবই দুটি  সম্পর্কে সুপারিশ ও পরামর্শ সংগ্রহের জন্য কর্মশালা শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, প্রতি তিন-চার বছর পর পর পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন ও পরিমার্জনের জন্য মাঠপর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবছরও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যবইয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আনার বিষয়ে প্রাথমিক পর্যালোচনা চলছে।

এদিকে এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে, বই দুটিতে মাঠপর্যায় থেকে রদবদলের যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, তার প্রায় সবই যৌক্তিক। ফলে কমিটি বেশিরভাগ অংশেই পরিবর্তনের সুপারিশ করতে পারেন।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে দুটি বইয়ে পরিবর্তনের বিষয়ে বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকদের নিয়ে কর্মশালা শেষ করা হয়েছে। বাংলা বইয়ে রদবদলের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে  আসা চারপৃষ্ঠার  সুপারিশে বলা হয়েছে— একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,কবি জসীম উদদীন,সৈয়দ মুজতবা আলী, এই তিনজনের কোনও রচনা না থাকা  দুর্ভাগ্যজনক মনে করেছেন অনেকে।

আরও বলা হয়েছে, জসীম উদদীন,সৈয়দ মুজতবা আলী সর্বস্তরের মানুষের আবেগের অনুষঙ্গ। পল্লীকবির ক্ষেত্রে এই আবেগের বিষয়টা বেশি প্রাসঙ্গিক। তাদের বাদ দিয়ে সিলেবাস  তৈরি করা সমীচীন নয় বলেও মনে করেন অনেকে। এছাড়া, মীর মোশাররফ হোসেন,ফররুখ আহমদ ও প্রমথ চৌধুরীর লেখা গদ্য-পদ্য না থাকায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে  হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর ‘ট্রাইআউট’ করা হচ্ছে। এখন সেসব তথ্য একটি কমিটির কাছে পর্যালোচনার জন্য দেওয়া হয়েছে। তারা পর্যালোচনা করে যদি পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে সেভাবেই সুপারিশ দেবেন। তার আগে তারা একাধিক কর্মশালাও করবেন।

সুপারিশে বলা হয়েছে, সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও পাঠ্যবইয়ে কতিপয় লেখকের রচনা অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। তাদের মধ্যে,অন্নদা শঙ্কর রায়, হুমায়ূন আহমেদ, বিহারীলাল  চক্রবর্তী,যতীন্দ্রমোহন বাগচী,সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ও সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সিলেবাস বৈচিত্র্যহীন দাবি করে বলা হয়েছে— এতে গদ্যে মননশীল ও সুচিন্তিত প্রবন্ধের অভাব আছে। ‘জীবন ও বৃক্ষ’ উৎকৃষ্ট প্রবন্ধ হলেও এই মানের আরও প্রবন্ধ থাকা উচিত।  বিশেষ করে প্রথম চৌধুরী কিংবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা দেখতে চান শিক্ষকরা। নৈতিকতা, দেশাত্মবোধ,মুক্ত ও উদার মনন গঠনের উপযোগী রচনার সন্নিবেশ থাকার পক্ষে  শিক্ষকরা জোরালো মত দিয়েছেন।

শিক্ষকদের সুপারিশে বলা হয়েছে,বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেগম রোকেয়ার ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের উপযোগিতা প্রশ্নসাপেক্ষ। একালের ছেলেমেয়েদের কাছে এটা উদ্ভট মনে হতে পারে।  এছাড়া, চাষা শব্দটি গালিবিশেষ। বেগম রোকেয়াকে বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে  মনে করা হয়। তাই তার অন্য রচনা অন্তর্ভুক্তির দাবি রাখে।

সাহস২৪.কম/রনি/আল মনসুর 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত