মিতু হত্যাকাণ্ড

জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বাবুল আক্তারের পরিবারকে

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১০:২৬

সাহস ডেস্ক

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটনের জন্য তার স্বামী এসপি বাবুল আক্তারের পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্ত কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে নিহত সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) আকরাম হোসেনের বোনের অভিযোগও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।

বাবুল আক্তারের সঙ্গে আকরাম হোসেনের স্ত্রী বহ্নির পরকীয়া ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এর সঙ্গে মিতু হত্যার যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। শুরু থেকেই এই হত্যার পেছনে পরকীয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। এই পরকীয়া মিতুর নাকি বাবুলের তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লোমহর্ষক এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান পুলিশের (সিএমপি)গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘মিতু হত্যায় কিছু তথ্যের জন্য সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এ ছাড়া মিতুর পরিবারের অন্য সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

তদন্ত কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন, মা শাহেদা মোশাররফ নীলা, বাবুল আক্তার ও তার দুই স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। গত ২৬ জানুয়ারি সিএমপি সদর দফতর থেকে বেরিয়ে মিতু হত্যায় পরকীয়ার কোনো যোগসূত্র ছিল কিনা তা তদন্তের জন্য অনুরোধ জানান মোশাররফ হোসেন।

এদিকে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এসআই আকরামের বোন গত মাসে অভিযোগ তোলেন, তার ভাইকে বাবুল আক্তারই পরিকল্পনা সাজিয়ে হত্যা করেছেন। আকরামের স্ত্রী বহ্নির সঙ্গে বাবুলের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলেও অভিযোগ আকরামের বোনের। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বোনেরা অভিযোগ করেন, তাদের ভাই আকরামকে খুন করতে সন্ত্রাসী ভাড়া করেছিলেন বাবুল আক্তার।

গত বছরের ৫ জুন ভোরে ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহিরকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন দুই সন্তানের মা মাহমুদা খানম মিতু। বাবুল আক্তার তখন ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে এসপি হিসেবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। স্ত্রী খুনের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তিকে আসামি করে ২০১৬ সালের ৬ জুন বন্দরনগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন তিনি। তখন থেকে পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তদন্ত শুরু করে।

খুনের ঘটনার পর পুলিশ জানায়, জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তারের সাহসী ও সফল ভূমিকা ছিল। এ কারণে জঙ্গিরা তার স্ত্রীকে খুন করে থাকতে পারে। কিন্তু এর কিছুদিন পরই তদন্ত কর্মকর্তারা এ বক্তব্য থেকে সরে আসে। তারা এ পর্যন্ত সাতজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম মুসা ওরফে মুসা সিকদার এখনও পলাতক। তিনি বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশের বিশ্বাস, মুসা এখনও দেশেই অবস্থান করছে। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন, ‘গত মাসে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বান্দরবান এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু সফল হয়নি। তাকে ধরতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’ যদিও মুসার স্ত্রী পান্না আক্তারের দাবি, গত বছরের ২২ জুন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার স্বামীকে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত