ওয়াশিংটনডিসিতে বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের বাৎসরিক সমাবর্তন

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:২৩

কাজী ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন, ওয়াশিংটনডিসি থেকে

ওয়াশিংটন ডিসির (পেরেন্টস সংগঠন বলে খ্যাত) এই মাতৃ সংগঠনটি প্রতি বছরই বাংগালি কমিউনিটিকে উপহার স্বরূপ  বাংলাদেশ মেলা নামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলা স্কুলের নিয়মিত ছাত্রছাত্রীরা যাঁদের বয়স পাঁচ বছর থেকে শুরু করে আঠারো বয়স পর্যন্ত তারা  তাদের নিজস্ব মেধা, অর্জিত শিক্ষালদ্ধ প্রতিভা সৃজনশীলতা দিয়ে নিজেদের সেরা পরিবেশনাগুলো কমিউনিটেকে উপভোগ করতে দেয় বলে এর নাম দেয়া হয় উপহার। 

তাদের পরিবেশনায়  বিভিন্ন ধরনের নাচ ও গানের প্রাধান্য থাকলেও অনুষ্ঠানটি বেশ কয়েকটি পর্ব স্তরে ভাগ করে করা হয়, তাই নিছক নাচ গানের অনুষ্ঠান বলে এর ব্যাপকতাকে খাটো করা যাবে না। অনুষ্ঠানের শৈলী নিপূণতা পরিবেশনার বিভিন্ন আঙ্গিকে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক শিক্ষামূলক পরিবেশনা হিসেবে গণ্য করা হয় বলেই এটি আর দশটির অনুষ্ঠানের চেয়ে ভিন্ন।

অনুষ্ঠানের শিল্পি, কলাকুশলীরা হলেন স্কুলের সকল স্তরের ছাত্র ছাত্রীরা। প্রথমে সারা বছর তারা বাংলা ভাষা বলা লিখা পড়ায় যতটুকু একাডেমিক বা শিক্ষা অর্জন করে তার মূল্যায়ন পর্ব শেষে তাদের সার্টিফিকেট বা সনদ প্রদান করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপর শুরু হয় তাদের নাচ ও গানের পরিবেশনা। নাচ ও গানের সার্বিক পরিচালনা করেন ওস্তাদ নাসির চৌধুরি, আশিষ বড়ুয়া, শুভ্র হাসান , নাচ ও গানের শিক্ষক রোকেয়া জাহান হাসি, ও রোজমেরি মিতু। 

গত রবিবার ওয়াশিংটন ডিসির উডব্রীজ শহরের একটি অডিটরিয়ামে অনুষ্টিত হলো অত্র এলাকার বহুল প্রত্যাশিত বিসিসিডিআই বাংলাস্কুলের বাৎসরিক জাঁকজমক পূর্ণ সমাবর্তন অনুষ্ঠান। বিপূল সংখ্যক উপস্থিত দর্শক শ্রোতার উপস্থিতিতে বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়া অনুষ্টানটি চোখের পলকেই যেন রাত সাড়ে দশটায় শেষ হয়ে যায়।

স্কুলের সকল শ্রেনি শিক্ষকদের পরিচয় পর্ব দিয়ে পরিসমাপ্তি ঘটে আনুষ্ঠানিকতার। সার্বিক পরিবেশনায় পরিচালনা করেন বিসিসিডিআই বাংলা স্কুলের সন্মানীত অধ্যক্ষ, কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব শামীম চৌধুরী, বাংলা স্কুলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট পংকজ চৌধুরি, সেক্রেটারি রেদোয়ান চৌধুরি, সহ সভাপতি জসীম উদ্দিনসহ বোর্ডের অন্যান্য পরিচালক বৃন্দ।

ওয়াশিংটন ডিসি বাংলা কমিউনিটির সর্বস্তরের বিজ্ঞ প্রাজ্ঞ ও সাধারণ নেটিজেনদের  উপস্থিতিতে এটি সত্যিকারের বাংলাদেশ মেলাতেই পরিণত হয়। অত্র এলাকার উপস্থিত বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তি ও সংগঠনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা ও বাডিয়ে দেয়।

ছোট ছোট বাচ্চাদের দ্বারা পরিবেশিত এবারের এই অনুষ্ঠানের বিশেষ একটি দিকের উল্লেখ করে শামীম চৌধুরি বলেন. যে, এই স্কুলে বাংলা শিখেও আমাদের সন্তানরাও আমেরিকার মেইনষ্ট্রীম স্কুলের বাংলা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হতে পারছে। বাংলাকে তাদের শিক্ষার অন্যতম ভাষা হিসেবে নিজেদের দক্ষতায় পছন্দ করতে পারছে। পাশাপাশি তাদের ক্ষুধে নাচ গানের পারদর্শিতায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করছে, যেমন বাংলা স্কুলেরই মাহাদিয়া ঈশালের আরটিভি ইয়াংষ্টার প্রথম রানার আপ অর্জনের কথা উল্লেখ করে ভবিষ্যতেও এর সংখ্যা বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যাক্ত করা হয়।

স্থান কাল পাত্র ভেদে অনুষ্ঠানটি যতক্ষুদ্রই হোক না কেন এর ব্যাপকতা ও ব্যাপ্তি অনেক। এটি স্বয়ং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, ও ভাষা বিষয়ক সকল কর্তৃপক্ষের যথাযত মূল্যায়নের সময় এসে গেছে। কমিউনিটির উপস্থিত সকল স্তরের নেটিজনেরাও মনে করেন যে, ওয়াশিংটন ডিসি বাংলাস্কুল কর্তৃপক্ষের বাচ্চাদের দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিচালিত কাজ কর্মগুলোর স্বীকৃতি প্রদান এখন সময়ের দাবী। 

এক বছর দুই বছর দশ বছর নয়। প্রায় অর্ধশত বছর যাবত তাদের বাংলা শিক্ষার প্রসার ঘঠিয়ে তারা আমেরিকান সোসাইটি ও মূল কমিউনিটিতেও বাংলাকে সম্পৃক্ত করছেন মেল্টিং পট কালচারকে সমৃদ্ধ করে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত