কিংবদন্তী অজিত রায়ের জন্মদিন আজ
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০১৯, ১৪:২৮
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও সংগীতজ্ঞ অজিত রায়ের জন্মদিন আজ। ৮১তম জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হলো তাঁকে। গণসংগীত ও রবীন্দ্রসংগীতে তিনি রেখেছেন বিশেষ অবদান।
অজিত রায় মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে পালন করেছেন কণ্ঠসৈনিকের ভূমিকা। সুরারোপ করেছেন অনেক জনপ্রিয় গান ও বহু বিখ্যাত কবিতায়।
প্রথীতযশা কন্ঠ শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ভুবনে অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে চার দশক কালেরও অধিক সময় ধরে তাঁর দৃপ্ত পদচারণায় মুখরিত ছিল সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল।
অজিত রায় ১৯৩৮ সালের ২৯ জুন বাংলাদেশের রংপুর জেলার উলিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম কণিকা রায়। কৈশোরেই তবলা বাজানো শিক্ষা গ্রহণ করেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁকে গানে হাতে খড়ি দিয়েছেন তার মা। গান শেখার প্রেরণা ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। এরপর ১৯৬৩ সাল থেকে রেডিওতে গান গাইতে শুরু করেন। পরে টেলিভিশন প্রচলনের পর থেকে সেখানেও গান গেয়েছেন তিনি।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়কাল হতে প্রতি বছর ভাষা আন্দোলনের বিশেষ দিন হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণ করে একটি করে নতুন গান করে আসছেন। এই রকমই একটি গান হলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত বিদ্রোহী কবিতায় আলতাফ মাহমুদের সুর করা গান।
তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা’, ‘অপমানে তুমি সেদিন’, ‘কথা দাও কথাগুলো’, ‘আমি যুগে যুগে আসি’, ‘এদেশ বিপন্ন’, ‘হে বঙ্গ ভান্ডারে তব’, ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে আজ’, ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’।
ষাটের দশকে রবিঠাকুর রচিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিকে তিনি মাঠে-ময়দানে গেয়ে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। সহকর্মী শিল্পীদের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের জুন মাসে তিনি কলকাতায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।
২০০০ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন অজিত রায়। এছাড়াও, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি।
এছাড়াও, বাংলাদেশ সরকারের সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৭৪ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেন।
সঙ্গীতশিল্পী ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অজিত রায় ফুসফুস সংক্রমণ ব্যাধিতে ভুগছিলেন। ঢাকার বারডেম হাসপাতালে ২০১১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, রবিবার দুপুর তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।