খুলনা শিপইয়ার্ডে দেশের সর্ববৃহৎ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংকের কিল লেয়িং অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২২, ২০:১৮

সাহস ডেস্ক

খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক (এলসিটি) নির্মাণ করবে। এগুলো হবে এযাবৎকালে দেশে নির্মিত সর্ববৃহৎ এলসিটি। বুধবার (১৫ জুন) সকালে খুলনা শিপইয়ার্ড চত্ত্বরে এসকল এলসিটি নির্মাণের কিল লেয়িং অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা নৌঅঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং সভাপতি ছিলেন খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজীজ। আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃক জাহাজ নির্মাণ এটাই প্রথম নয়। আগেও এ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য পাঁচটি পেট্রোল ক্র্যাফট, দুটি লার্জ পেট্রোল ক্র্যাফট, দুটি টাগ বোট এবং ছয়টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ইউটিলিটি সফলভাবে নির্মাণ করে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে সর্ববৃহৎ দৈর্ঘের এলসিটি নির্মাণ করছে। এগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতার প্রমাণ। কেবল নৌবাহিনীর জন্য নয়; কোস্টগার্ড, মোংলা বন্দর, পায়রা বন্দর, মৎস্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ করে শিপইয়ার্ড দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

খুলনা শিপইয়ার্ড জাহাজ নির্মাণ করে অচিরেই বিদেশে রপ্তানিতে সক্ষম হবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৯ সালে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। মৃতপ্রায় এ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে তার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করেছে এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সঠিক নেতৃত্ব, কর্মনিষ্ঠা ও সততা যে একটি প্রতিষ্ঠানকে সফলতার অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে তার সফল উদাহরণ এই খুলনা শিপইয়ার্ড।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য নির্মিতব্য তিনটি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক (এলসিটি) এদেশের সর্ব বৃহৎ দৈর্ঘের (৭০ মিটার) এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক যাতে অত্যাধুনিক মেশিনারি এবং যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হবে। জাহাজ তিনটি আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা এবং দেশের অভ্যন্তরের নদীসমূহে অপারেশন সক্ষম। প্রতিটি জাহাজ একই সাথে ছয়টি মাঝারি মানের ট্যাংক পরিবহন করা যাবে। এছাড়াও ছয়টি মাঝারি মানের ট্যাঙ্কের পরিবর্তে প্রতিটি জাহাজ পাঁচটি মিডিয়াম অ্যটিল্যারি গান ভেহিকেল অথবা ১২টি এপিসি অথবা ১৮টি মিলিটারি ট্রাক পরিবহনে সক্ষম। এলসিটিমূহের প্রাথমিক কাজ হবে যুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের উভচর অভিযান পরিচালনা এবং ট্যাংক, এপিসিসহ সার্পোট ইউনিট ও ল্যান্ডিং ফোর্স পরিবহন করা।

তাছাড়া শান্তিকালীন সময় এলসিটি এর মিশন হবে লজিস্টিক শিপ এর ভূমিকা পালনের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর ও এর তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় মানবিক সহায়তা প্রদান এবং ত্রাণসামগ্রী ও কর্মী পরিবহন করা। দেশে নির্মিত প্রথম ল্যান্ডিং ক্র্যাফট হিসেবে এটা দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। জাহাজ তিনটি আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি লয়েডস রেজিস্ট্রার (ইংল্যান্ড) এর নীতিমালা অনুসরণ করে নির্মিত হবে। কিল লেয়িং অনুষ্ঠানে খুলনা শিপইয়ার্ড এর উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত