গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়িয়েছে সরকার

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২১, ১৩:২৭

সাহস ডেস্ক

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং কোনো গাড়িতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন না করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় বাস ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়িয়েছে। এই আদেশ আগামী দুই সপ্তাহ কার্যকর থাকবে। যাত্রীদের বুধবার থেকে এই বর্ধিত ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

এর আগে গত বছরের ৩১ মে সরকার বাস ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল। অর্ধেক যাত্রী বহন করায় বাস মালিকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) আগামী দুই সপ্তাহের জন্য ১৮ দফা নির্দেশ জারি করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত আগামী দুই সপ্তাহ এসব নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এজেন্সিগুলিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এই নির্দেশনাবলী জনসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা, মাস্ক ব্যবহার, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন, কোভিড -১৯ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সম্পর্কিত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

নির্দেশনাগুলো হলো:

১) সকল ধরনের জনসমাবেশ (সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং অন্যান্য) সীমিত রাখতে হবে। অত্যন্ত সংক্রমণের হারযুক্ত অঞ্চলে সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ। বিবাহ ও জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাবেশকে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২)এটি নিশ্চিত করতে হবে যে মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে বজায় রাখা।

৩) পর্যটন/ বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল/ থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৪) গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো গাড়িতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

৫) কোভিড -১৯ সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬) বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে।

৭) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৮)স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে হবে।

৯)শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০) সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

১১) অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা, লোক সমাগম বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১২) প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৩) করোনায় আক্রান্ত/ করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

১৪) জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা/ কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কাজ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৫) সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬) সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে হবে।

১৭) হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

১৮) কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত