সংঘর্ষে সিএনজি চালক নিহত: কাদের মির্জার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২১, ১৩:৫৩

সাহস ডেস্ক

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে এক সিএনজি চালক নিহতের ঘটনায় করা মামলা গ্রহন করেনি পুলিশ। নিহত সিএনজি চালকের ছোট ভাই এমদাদ হোসেন ওরফে রাজু কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে তা ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) এজাহার থেকে প্রধান আসামি কাদের মির্জাকে বাদ দেওয়াসহ কিছু ত্রুটির থাকা কথা বলে পুলিশ সেটি গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন এমদাদ হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নিহত আলাউদ্দিনের ভাই একটি এজাহার নিয়ে থানায় এসেছিলেন। কিন্তু এজাহারে সাক্ষীর নামসহ কিছু ত্রুটি ছিল, সে জন্য তিনি আবার এজাহার সংশোধনের জন্য নিয়ে গেছেন। এজাহার থেকে কাদের মির্জার নাম বাদ দিতে আপনারা বলেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এসপি আলমগীর হোসেন বলেন, না, আমরা বাদ দিতে বলব কেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার জেলা শহর থেকে গ্রেপ্তার করা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলকে মঙ্গলবার রাতে পৌরসভা ভবনে হামলা-ভাঙচুর ও গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক। তিনি বলেন, এই মামলা ছাড়াও তদন্তাধীন আরও একাধিক মামলা রয়েছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।

এদিকে বসুরহাট পৌরসভা পৌরসভা ভবন চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ভবনের ভেতরে রাত কাটিয়েছেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তার সঙ্গে সেখানে অল্প কয়েকজন কর্মী আছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, বসুরহাট পৌরসভা ভবন ঘিরে রেখেছেন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। পরিস্থিতির দেখভাল করার জন্য বসুরহাটে অবস্থান করছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের একজন পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, সোমবার (৮ মার্চ) বিকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিকাল ৪টায় রূপালী চত্বরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের একাংশ (মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপ)। সন্ধ্যা ৬টার দিকে থানার পশ্চিম পাশের সড়ক (মাকসুদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) দিয়ে সভায় হামলার চেষ্টা চালায় মির্জার সমর্থকরা। এসময় উভয় পক্ষের সমর্থকরা মুখোমুখি হলে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এ সংঘর্ষ পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে মেয়র কাদের মির্জার সমর্থকরা বসুরহাট বাজারে একটি মিছিল বের করলে বাদলের সমর্থকদের সঙ্গে পুনরায় সংঘর্ষ হয়। পরে কাদের মির্জার অনুসারীরা বসুরহাট পৌরসভা ভবন ও প্রাঙ্গণে অবস্থান নিলে বাদল গ্রুপের লোকজন ফের হামলা চালায়। এসময় তাদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময় শুরু হয়। উভয় পক্ষের গুলিতে ২০ জন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে রাত পৌনে ১১টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে উপজেলার চরকালী গ্রামের মোমিনুল হকের ছেলে আলাউদ্দিনকে (৩০) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত