ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় তারেক ও মাহফুজের ডিএনএ-এর নমুনা সংগ্রহ

প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৪৬

সাহস ডেস্ক

সিলেট এমসি (মুরারিচাঁদ কলেজ) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় এজাহার নামীয় দুই আসামি তারেক ও মাহফুজের ডিএনএ-এর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার (৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশ পাহারায় তাদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এর আগে পুলিশ বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, রাজন মিয়া এবং আইনুদ্দিনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে।

পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ধর্ষণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার জন্য ওসমানী মেডিক্যালে নেওয়া হয়। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত তারা ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।

এর আগে গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ঘটা এ ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার সিলেটের শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন ওই তরুণীর স্বামী। এমসি কলেজের হোস্টেলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার বাদী গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় শাহপরাণ থানায় এজাহার দাখিল করেন। পরে এটি এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) করা হয়।

মামলায় নাম উল্লেখ করা ছয় আসামি হলো-সাইফুর রহমান (২৮), তারেকুল ইসলাম (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম (২৫)। 

লিখিত এজহারে গৃহবধূর স্বামী উল্লেখ করেন, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেট কারে হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজারে যান। মাজার জিয়ারত শেষে সন্ধ্যায় এমসি কলেজের মূল গেটের সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে সিগারেট কেনার জন্য যান তিনি। গাড়ি থেকে নামার পরপরই আসামিরা তার স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। তিনি প্রতিবাদ করলে সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। তখন তার স্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ করেন। এতে উপস্থিত আসামিরা ধমক দিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ওই গাড়িতে উঠতে বলে। 

এ সময় আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক প্রাইভেটকারের চালকের আসনে বসে। তিনি ও তার স্ত্রী গাড়ির পিছনের সিটে উঠলে তার স্ত্রীর পাশে সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্কর বসে। আসামি মাহবুবুর রহমান রনি গাড়ির চালকের পাশের আসনে বসে। গাড়ি চালিয়ে এমসি কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণের ভেতর সাত নম্বর ব্লকের পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন বিল্ডিংয়ের সামনে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে খালি জায়গায় রাখা হয়। অন্য আসামিরা মোটরসাইকেল যোগে পেছনে পেছনে পৌঁছায়। 

এরপর তারেকুল ইসলাম তারেক তার মানিব্যাগ থেকে ২ হাজার নিয়ে নেয়। এছাড়া সোনার গহনা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এসময় তার স্ত্রী চিৎকার করতে চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরে আসামিরা। স্ত্রীকে গাড়িতে তাকে এমসি কলেজ হোস্টেলের সাত নম্বর ব্লকের পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের সামনে পশ্চিম পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত অনুমান ৮টায় তাকে আসামিদের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি ও অর্জুন লস্কর কারের ভিতরে পর্যায়ক্রমে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় তিনি স্ত্রীর চিৎকার শুনে বাঁচতে চাইলে অন্য আসামিরা তাকে আটকে  রাখে। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তার স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে আসলে আসামিরা তাকে প্রাইভেটকার রেখে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যেতে বলে এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে তাদের কাছ থেকে গাড়ি নিতে বলে। তিনি তখন স্ত্রীকে নিয়ে হেঁটে এমসি কলেজ হোস্টেল গেটে এসে সিএনজিতে অটোরিকশাতে করে টিলাগড় পয়েন্টে আসেন এবং পুলিশকে জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত