গণপরিবহন সরকারি নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:৩৬

সাহস ডেস্ক

কিছু কিছু পরিবহন, যারা সরকারি নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রতিটি বাসে সরকার অনুমোদিত ভাড়ার তালিকা প্রদর্শনের বিধান রয়েছে। এ বিধান কার্যকর করতে আমি বিআরটিএ ও মালিক সমিতিকে অনুরোধ করছি।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

তিনি বলেন, আজ থেকে গণপরিবহন করোনাকালের জন্য সমন্বয় করা ভাড়ার পরিবর্তে আগের ভাড়ায় ফিরছে। জনস্বার্থে এবং যাত্রীদের স্বার্থে আমি সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকসহ সকল স্টেকহোল্ডারের সহযোগিতা কামনা করছি।

মন্ত্রী বলেন, গণপরিবহনে ভ্রমণকালে যাত্রীসহ পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। যত আসন তত যাত্রী অর্থাৎ দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। সাবান পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে পর্যাপ্ত। ট্রিপের শুরু এবং শেষে পরিবহনকে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি জনস্বার্থে এ নিয়ম বা শর্ত মেনে বাস-মিনিবাস চালানোর অনুরোধ করছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিশেষ করে ডিএমপি, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সক্রিয় থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। অনেক পরিবহন নিয়ম মেনে গাড়ি চালায়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের শোকের মাস শেষ হয়েছে। আমি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি। আগামীকাল দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ মাসের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) একটি নির্দেশনা জারি করে। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে রাজধানী ঢাকার গণপরিবহন, দূরপাল্লার বাস এবং সারা দেশের স্থানীয় যাতায়াতের কোথাও বাস–মিনিবাসে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, চালকের সহকারী, টিকিট বিক্রির কাউন্টারের কর্মী—সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। তাদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান–পানি, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

করোনা পরিস্থিতিতে মার্চের শেষ সপ্তাহে বাস–মিনিবাসসহ সব ধরনের গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১ জুন থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস–মিনিবাস চালু করা হয়। এর জন্য ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ায় সরকার।

করোনা পরিস্থিতির আগে ঢাকায় কিলোমিটারপ্রতি মিনিবাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা এবং বড় বাসে ১ টাকা ৭০ পয়সা ভাড়া নির্ধারিত ছিল। দূরপাল্লার পথে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ১ টাকা ৪২ পয়সা। ঢাকায় সর্বনিম্ন ভাড়া আছে মিনিবাসে ৫ এবং বড় বাসে ৭ টাকা। আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে এই ভাড়া পুনরায় কার্যকর হচ্ছে।

পরিবহনমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, তারা সারা দেশের পরিবহন কোম্পানি ও মালিকদের চিঠি দিয়ে আগের ভাড়ায় যত আসন তত যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করলে কঠোর শাস্তি পেতে হবে, সেটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার টার্মিনাল ও রাস্তায় মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা সরকারকে সহায়তা করতে মাঠে থাকবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত ২৪ মার্চ থেকেই বাংলাদেশে গণপরিবহন চলাচল কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই মাস পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গত ৩১ মে থেকে গণপরিবহন ও ট্রেন চালু করার অনুমতি দেয় সরকার। তখন বাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্তে প্রায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়।  

তিন মাস বর্ধিত ভাড়ায় বাস-গণপরিবহন চলার পর শনিবার (২৯ আগস্ট) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়ায় বাস-গণপরিবহন চলাচল করবে।  

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের ভাড়ায় বাস ও গণপরিবহন চালাতে আমরা প্রস্তুত। এরই মধ্যে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে পরিবহন শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত