মাস্ক কেলেঙ্কারি: গ্রেপ্তার আ’লীগ নেত্রী শারমিন

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২০, ০৩:২০

সাহস ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহ অভিযোগে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর শারমিন জাহানকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।’

এর আগে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (জেসি) মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলার প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।’

মামলায় বিএসএমএইউয়ের প্রক্টর মো. মোজাফফর আহমেদ বলেছেন, ‘গত ২৭ জুন শারমিন জাহানকে ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কার্যাদেশের বিপরীতে ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০টি; ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০টি ও ১ হাজারটি এবং ১৩ জুলাই চতুর্থ দফায় ৭০০টি মাস্ক সরবরাহ করে।’

তিনি বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় লটের মাস্কে কোনো সমস্যা ছিল না। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় লট বিতরণ ও ব্যবহারে ত্রুটি পাওয়া যায় এবং মাস্কের গুণগত মান স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি। কোনো মাস্কের বন্ধনী ফিতা ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো লেখায় ত্রুটিপূর্ণ ইংরেজি লেখা পাওয়া গেছে, কোনো কোনো মাস্কের নিরাপত্তা কোড ও লট নম্বর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে নকল বলে জানা গেছে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে মাস্কের গুণগত মান নিম্নমানের ছিল।’

মামলায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিন জাহানকে ১৮ জুলাই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। শারমিন ২০ জুলাই দেওয়া জবাবে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেন, যা দোষ স্বীকারের শামিল। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ করেছে।

মামলার আসামি শারমিন জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক পদে ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ছিলেন। এর আগের কমিটিতে একই উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত তিনি। তাঁর বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জের গোহালকান্দায়। তিনি মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত