পিলখানা হত্যা মামলা

বিজিবির গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যর্থতা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে: হাইকোর্ট

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:০৩

সাহস ডেস্ক

পিলখানা হত্যা মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন ও ২০০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রায়।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে পিলখানার হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যর্থতা তদন্ত করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সুপারিশ করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশ করা হলো। সংক্ষিপ্ত ওই রায় ঘোষণার পর থেকেই হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার কাজ শুরু করেন বিচারপতিরা।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে রায় দেন।

বিচারপতি শওকত হোসেন লিখেছেন এক থেকে ১১ হাজার ৪০৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত, এরপর ১১ হাজার ৪০৭ থেকে ২৭ হাজার ৯৫৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত লিখেছেন বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী এবং এরপর থেকে ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত লিখেছেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার।

ওই রায়ে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার তার ১১ দফা সুপারিশের উল্লেখ করেছেন:

১. ডাল ভাত কর্মসূচি অব্যাহত রাখা যথার্থ হবে না।

২. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিজিবি সদস্যদের সম্মান হারিয়ে যায় এমন কোনও কর্মসূচি নেওয়া ঠিক হবে না।

৩. বিজিবির মধ্যে কোনও সমস্যা দেখা দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি কর্তৃপক্ষকে তা সমাধানে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নিতে হবে।

৪. অফিসার ও  সদস্যদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ থাকলে তা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

৫. বিজিবি সদস্যদের পাওনা টিএ ডিএ বিল যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করতে হবে।

৬. ছুটিসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করতে হবে।

৭. ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে বিজিবি কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যর্থতা তদন্ত করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

৮. সিপাহি ও অফিসারদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

৯. কেউ দায়িত্ব অবহেলা করলে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

১০. এ ধরনের শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যকার জটিল পরিস্থিতি এড়াতে অফিসার ও সেনাদের মধ্যে অপ্রত্যাশিত ভাষা ও আচরণ পরিহার করতে হবে।

১১. পিলখানার অস্ত্রাগারে নিরাপত্তা কঠোর পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিল পরিস্থিতি এড়ানো যায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত