কমলগঞ্জে বর্গাচাষির ধান কাটলেন কৃষক সমিতি ও শব্দকর ছাত্র পরিষদ

প্রকাশ : ২৮ মে ২০১৯, ১২:০০

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনয়িনের ধলাইর পার গ্রামের বর্গাচাষী জহুর মিয়ার চাষাবাদকৃত জমির ধান কেটে দিয়েছে কৃষক সমিতি ও শব্দকর ছাত্র পরিষদ। উৎপাদন ব্যায় আর টাকার অভাবে জমিতে ধানা পাকার পরও কাটতে না পারায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে ধান কেটে দিল কৃষক সমিতির কয়েকজন কৃষক ও শব্দকর ছাত্র পরিষদের কয়েকজন সদস্য।

রবিবার সকাল ১১টায় জবলারপার গ্রামে বেশ উৎসাহ উদ্দীনায় ৫ বিঘা জমির বোরো ধান কেটে দেন।

জানা যায়, জহুর মিয়ার নিজের জমি না থাকলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তিনি জবলার পার গ্রামের প্রতাপ সিংহের ৫ বিঘা জমিতে বর্গা হিসেবে চাষাবাদ করেন। তবে এবছর বাজারে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন জহুর মিয়া। বর্গাচাষি জহুর মিয়া জানান, জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে জমির মালিককে খড়সহ উৎপাদিত ফসলের প্রায অর্ধেক দিতে হয় জমির মালিককে। এ বছর ধানের উৎপাদন ব্যয়ে আর ধানের বাজার নিম্ন থাকার কারণে তিনি অসুবিধায় পড়েন। ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষাবাদে ৩০ হাজার টাকা ব্যায় হলেও ওই জমিতে ৬০ মণ ধানের অর্ধেক পরিমাণ ধান জমির মালিককে দিতে হয়। ৩০ মণ ধান দেয়ার পর অবশিষ্ট ৩০ মণ ধানের মণ প্রতি ৪৫০ টাকা করে বাজার মূল্যে লোকসান গুণতে হয়। ৩০ মন ধান বিক্রি করে কোন ভাবেই তার খরচ উঠবে না। ধানার কাটার শ্রমিককে দৈনিক খাওয়াসহ মজুরি দিতে হয় ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। তাই জমিতে ধান পাকার পরও তিনি কাটতে পারছিলেন না।

জমির মালিক প্রতাপ সিংহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার জমিতে চুক্তি বর্গা হিসেবে জহুর মিয়া চাষাবাদ করেন। তবে এবার ধানের দাম কমে যাওয়ায় আর উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সব কৃষকদের মতো বর্গাচাষি জহুর মিয়াও সমস্যায় পড়েন।

সিপিবি কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি আহমদ সিরাজ ও মৌলভীবাজার জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি জহর লাল দত্ত বলেন, একজন অসহায় বর্গাচাষির পাশে দাঁড়িয়ে জমির ধান কেটে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ কাজে ধান কাটার মজুরি ব্যয় থেকে বর্গাচাষিকে সাহায্য করা গেলে।

কমলগঞ্জ উপজেলা শব্দকর ছাত্র পরিষদের সভাপতি সঞ্জিত শব্দকর ও সাধারণ সম্পাদক শব্দকর বলেন, বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনায় তারা বর্গাচাষি জহুর মিয়ার ধান কেটে দিলেন।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত