কারেন্ট জালে পোনা শিকার হুমকির মুখে মৎস্য সম্পদ

প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:৩৫

সাহস ডেস্ক

অদক্ষ পোনা আহরণকারীরা ১টি পোনা আহরণে বিভিন্ন প্রজাতির ৯০টি মাছের পোনা নিধনের কারণে উপকুলীয়াঞ্চলের সম্ভাবনাময় মৎস্য খাত হুমকির মুখে। 

অপরিকল্পিতভাবে বাগদা রেনু আহরণ, নিষিদ্ধ ঘোষিত পারসের পোনা ও অবাধে মাছের পোনা নিধনের ফলে দেশের উপকুলীয়াঞ্চলে এ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। কোস্টগার্ড প্রতি সপ্তাহে একাধিক অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছের পোনা আটক করে নদীতে অবমুক্ত করছে। তবুও থেমে নেই চোরা সিন্ডিকেট চক্রের অপতৎপরতা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপকুলীয়াঞ্চলে ৫ হাজার ৭৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট সুন্দরবনের  ১ হাজার ৭ বর্গকিলোমিটার জলাভুমি। এ জলার মধ্যে ৮শ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র উপকুল এবং বনের অভ্যন্তরে জলার আয়তন ৯৬০ বর্গকিলোমিটার। কয়েক বছর আগেও অভ্যন্তরীণ জলাভুমি অর্থাৎ নদী-নালা খাল-বিল ও হ্রদের প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছের উৎপাদন ছিল ৪ মেট্রিক টনের বেশি এবং সমুদ্র উপকুলীয় অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছ উৎপাদন হতো ৪ মে:টন। কিন্তু বর্তমান সুন্দরবনে এলাকায় মাছের উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে উপকুলীয় অঞ্চলের শহর, বন্দর, ও হাট-বাজারে ইলিশ ও রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। 
সূত্র আরো জানায়, চিংড়ি চাষের মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল হৃদ থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে বাগদা পোনা সংগ্রহ করে। এছাড়া প্রায় সারাবছরই সুন্দরবনের অভ্যন্তরে এবং উপকুলীয় এলাকার হাজার হাজার জাল মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বন বিভাগের বৈধ অনুমতি নিয়ে বনের অভ্যন্তরে হতে বাগদা পোনা আহরাণ ও শিকার করা হয়। মৎস্য খাত থেকে বন বিভাগের মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকারের প্রায় দু’ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু অপরিকল্পিত পদ্ধতিতে পোণা আহরণ ও মাছ শিকারের ফলে রাজস্ব আয়ের চেয়ে বহুগুন ক্ষতি হচ্ছে মংস্য সম্পদের । বাগদা পোনা ধরার সময় নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে অন্যান্য মাছের পোনা। এছাড়া জেলার ছোট ছোট মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করার কারণে সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চলের  বিভিন্ন এলাকার নদী-নালা ক্রমান্বয়ে মৎস্য শূন্য হয়ে পড়েছে।

মানুষ বাড়ছে কিন্তু মাছের উৎপাদন বাড়ছে না। মাছের সংকটের কারণে মাছ এখন সাধারণ মানুষের কাছে সোনার হরিণের মত। নিন্ম ও সাধারণ আয়ের মানুষেরা চাহিদা মত মাছ ক্রয় করতে পারছেনা। অপরদিকে সমুদ্রে মাছ শিকারে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তেমনি নদী ও সমুদ্রের পোনা একই ভাবে ধরে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সঙ্কট দেখা দিচ্ছে মাছের।

সাহস২৪.কম/ আবুল বাশার শিবলী

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত