মানবতাবিরোধী অপরাধ

নেত্রকোনার পলাতক ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০১৯, ১২:১৪

সাহস ডেস্ক

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় নেত্রকোনার পলাতক ৫ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এ রায় দেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ৫ আসামি হলেন- শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মো. আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন (৭০)।

 

এর আগে, রায় ঘোষণার জন্য আজকের এই দিন ঠিক করে বুধবার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২৮ জানুয়ারি মামলাটির রাষ্ট্র ও আসামি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য যেকোনোদিন (সিএভি) অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন।

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেছুর রহমান বাদল ও তার সঙ্গে ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অপরদিকে আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে ট্রাইব্যুনালের নিযুক্ত করা আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

এই মামলার মোট আসামি ছিলেন সাতজন। তাদের মধ্যে কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা যান আহাম্মদ আলী (৭৮)। আর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় মারা যান আরেক আসামি আব্দুর রহমান (৭০)। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল আসামিদের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) ২৬ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত তদন্ত শেষ করেন। ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ তিনি প্রসিকিউশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন, এরপর ২২ মে প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুরে রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির বাদী হয়ে ২০১৩ সালে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় মোট আসামি হয় সাতজন।

মামলায় আব্দুল কাদির অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের সন্ধান জানতে চান।

ভাইদের কোনো সন্ধান না দেয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুইদিন আটক রেখে অমানসিক নির্যাতন চালায়। পরদিন তাকে কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয় রাজাকাররা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত