সততাই হচ্ছে একজন বিচারকের মূল শক্তি: প্রধান বিচারপতি

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৫:২৯

সাহস ডেস্ক

সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, দেশে দৃঢ়ভাবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রতিটি মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য যা কিছু আমার পক্ষে করা সম্ভব, তার সবটুকু আমি করব।

তিনি বলেন, সততাই হচ্ছে একজন বিচারকের মূল শক্তি আর জবাবদিহিতার জায়গা হচ্ছে তার বিবেকে। তাই শপথ অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করলে বিচারকদের জন্য পৃথক আচরণ বিধির প্রয়োজন নিই।

আজ রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দেয়া সংবর্ধনার জবাবে দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতির এজলাসে সকাল ১০টা ৪০মিনিটে তাকে এ সংবর্ধনা দেন অ্যাটর্নি  জেনারেল মাহবুবে আলম ও বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন।

আইনজীবীদের উদ্দেশে নতুন এ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি আশা করব, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের মতো যেভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন ঠিক একইভাবে প্রধান বিচারপতি দায়িত্বপালন করতে গিয়েও তাঁরা তাদের সহযোগিতার হাত আমার দিকে প্রসারিত করবেন। বার (আইনজীবী সমিতি) ও বেঞ্চের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, এবং সহযোগিতা একটি সমৃদ্ধ বিচার বিভাগের ভিত্তি গড়ে তুলবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল একটি দেশ উন্নয়নের পথে অগ্রগসর হতে পারে। যেখানে তিনটি অঙ্গের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকে, সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। এই তিনটি অঙ্গের কাজের মধ্যে যেন সমন্বয় রক্ষা করা যায়, সেজন্য আমি সব সময় চেষ্টা করব। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট যেন সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে সংবিধান অনুসারে তার নিজ দায়িত্ব পালন করে সেটিও আমি নিশ্চিত করতে চেষ্টা করব।’

তিনি বলেন, মামলা জট আজ শুধু আদালতের একার সমস্যা নয়। এটি বারের জন্যও অস্বস্থির কারণ। মামলার পাহাড় যত জমতে থাকবে, আদালতের সঙ্গে সঙ্গে বারের প্রতিও তেমনি বিচার প্রার্থী মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা কমতে থাকবে। সমস্যা সমাধানে বারকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বিচারে ডিজিটাল প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু এবং ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি করে সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশনের পথে অগ্রসর হতে হবে। ডিজিটাইজেশনের জন্য যে পরিবর্তন হবে বারকেও সেটা স্বাগত জানাতে হবে এবং তার বিরোধিতা না করে তার সঙ্গে অভ্যস্থ হতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় সরকারের নিরন্তর সহযোগিতাও একান্তভাবে কাম্য।

‘বিচার বিভাগের অগ্রসরতার জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন আমি তার সবকিছু করার চেষ্টা করবো। বিচার বিভাগের বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, দেশে একটি ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠা, মামলা অনুপাতে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিচার প্রক্রিয়ার গতি ত্বরান্বিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো ও কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা আমার প্রাথমিক লক্ষ্য।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত