মোটরসাইকেল যেন সাজানো গাছের বাগান

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:১১

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
ছবি: সাহস

সবুজ গাছপালার প্রতি যত ভালবাসা এক যুবকের। ব্যতিক্রম উদ্যোগে গাছের প্রতি নিজের ভালবাসা প্রকাশ করেছেন বৃক্ষপ্রেমী রং মিস্ত্রি হাবিবুর রহমান হাবিব। নিজের চালানো মোটরসাইকেল সাজিয়েছেন নানা প্রজাতির গাছ দিয়ে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করার সময় সবাই তাক লাগিয়ে দেখেন। যেন এটি মোটরসাইকেল নয়, যেন সবুজ গাছপালার বাগান।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টবাড়ী ইউনিয়নের দুরাকুটি গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবিব। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি পেরিয়ে কাজের সন্ধানে বসবাস করেন ঢাকায়। পেশায় হাবিব একজন রং মিস্ত্রি। অনেক আগ থেকে গাছ ও প্রকৃতিকে খুব ভালবাসেন হাবিব। তার গ্রামের বাড়িতে বাগান করেছেন। শহরের বাসাতেও নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। কিন্তু এসব ছেড়ে তাকে জীবিকার তাগিতে ছুটে চলতে হয় দেশের নানা স্থানে। তাই সিদ্ধান্ত নেন তার একমাত্র বাহন সখের মোটরসাইকেলটিও তিনি সাজাবেন গাছ দিয়ে। শুরু হয় চেষ্টা। তিন মাসের চেষ্টার পর আসে সফলতা। 

দীর্ঘ ৩ বছর ধরে মোটরসাইকেলের চাকা, সিটকভার, তেলের ট্যাঙ্কি, পা দানি, নম্বর প্লেটের উপর-নিচে সবখানেই বিশেষ কায়দায় গাছ রেখেছেন। সামনে শোভা পাচ্ছে জাতীয পতাকা, তাজা গোলাপ ফুল। কৃত্রিম ঘাসের পাশাপাশি জীবন্ত গাছ দিয়ে সাজিয়েছেন তার বাইক। শুধু তাই নয়, হাবিবুরের পায়ের জুতাও কৃত্রিম সবুজ ঘাস দিয়ে সাজানো। মাথার হেলমেটে রং করেছেন জাতীয় পতাকার রঙে। হাবিবুরের মোটরসাইকেলের এই সাজসজ্জা দেখে মুগ্ধ মানুষ। লালমনিরহাট সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে গেলেই তিনি তার সখের মোটরসাইকেলটি নিয়ে যান। মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোন যানবাহনে সহজে উঠে না হাবিব। মাঝে মাঝে পরিবারকেও নিয়ে এ মোটরসাইকেলে ঘুরেন। কিন্তু সেখানেই এ মোটরসাইকেলটি তিনি থামান, সেখানেই দেখতে ভীড় করেন অনেকে মানুষ।

মোটরসাইকেল সাজানো গাছের বাগান দেখে অবাগ হয়ে আঃ রহিম জানান, এটি দেশের প্রথম মোটরসাইকেল হবে। এমন মোটরসাইকেল আমি প্রথম দেখলাম। অনেক সুন্দর করে গাছ দিয়ে বাইকটি সাজানো। গাছ ও প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই তিনি পথ চলছেন। সবুজ গাছপালা ও প্রকৃতির প্রতি অন্যরকম ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে হাবিব।

বৃক্ষপ্রেমী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, গাছ লাগানো মোটরসাইকেল নিয়ে আমি সারাদেশে চলাচল করি। সবুজ প্রকৃতিকে প্রায় সবাই ভালবাসেন। তারপরও অসচেতনভাবে বৃক্ষনিধন হচ্ছে সারাদেশে। প্রতিদিন যে পরিমাণ গাছ নিধন করা হয়। সে পরিমাণ গাছ কেউ লাগায় না। এটা সত্যিই কষ্টের। তার এই ভিন্ন রকম আয়োজনের উদ্দেশ্য গাছের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ আর গাছ ও প্রকৃতির প্রতি মানুষকে আরো বেশি আকৃষ্ট করা। যাতে তারা বেশি বেশি গাছ লাগান এবং গাছের পরিচর্যা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত