পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক নয় : রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:৪৯

সাহস ডেস্ক

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তাগিদ দিয়েছেন, শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপশি সম্মিলিতভাবে মান নিশ্চিতেও কাজ করতে হবে। জ্ঞানদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিকশিত করে তোলাই শিক্ষার প্রকৃত কাজ। তাই শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি গুণগত শিক্ষার উপর সমধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

এ দেশের শিক্ষার্থীরা যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যোগ্যতার সঙ্গে টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন তিনি।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) গাজীপুরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) পঞ্চম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার হার ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এটা অত্যন্ত আশাপ্রদ ব্যাপার। তবে মনে রাখতে হবে, পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক কথা নয়।

সমাবর্তনে উপস্থিত নানা বয়সী ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, শিক্ষা আর অভিজ্ঞতার সমন্বয়েই জীবনে পরিপূর্ণতা আসে। 

উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য কেবল ডিগ্রি অর্জন নয়, চাকরি বা কর্মজীবনে ভাল উপার্জন নয়, প্রকৃত অর্থে একজন পরিপূর্ণ আদর্শ মানুষ হওয়া, যেখানে জ্ঞানের প্রবাহমান ধারার সঙ্গে নৈতিকতা, আদর্শ ও দেশপ্রেমের মতো গুণাবলির প্রতিফলন ঘটবে।

শিক্ষার্থীদের দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ।

মনে রাখতে হবে আমাদের এ ভূ-ভাগ হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত সমৃদ্ধ জনপদ। এ জনপদ সমৃদ্ধ হয়েছে নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষের বর্ণাঢ্য সংস্কৃতিতে। জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান তাই আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্যের অংশ।

পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যে সীমিত না থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘প্রকৃত জ্ঞানচর্চার শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলকে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নিজ নিজ অঙ্গনকে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিপূর্ণ ক্ষেত্রে পরিণত করার আহ্বান জানান।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতির প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, নানা কারণে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত ও প্রচলিত পদ্ধতিতে লেখাপড়ার সুযোগ হারানো অনেক মানুষের শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের সুবিধামত সময়ে নিজস্ব প্রচেষ্টায় শিক্ষা গ্রহণের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ দান করে দেশে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাই দেশব্যাপী বিস্তৃত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এবারের সমাবর্তনে পাঁচ হাজার ১০ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ডিগ্রি দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কমনওয়েল্থ অব লার্নিংয়ের প্রেসিডেন্ট ও সিইও অধ্যাপক আশা কানওয়ার।

এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং বাউবি উপাচার্য এম এ মাননান বক্তব্য দেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত