চাঁদপুরে ২২ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:২৮

সাহস ডেস্ক

চাঁদপুর জেলায় এবার ২২ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে জলাবদ্ধতা।

অতি বৃষ্টিপাতে চাঁদপুরে নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এবং ক'মাস ধরে অতি বৃষ্টির কারণে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে রোপা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফসলের মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এবং খালগুলো মানুষের দখলে চলে যাওয়া কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনায় খালগুলো আবদ্ধ থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

এদিকে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের জলাবদ্ধতা এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে।

সরজমিনে দেখা যায়, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার হানিরপাড়, কলাকান্দা, মিলারচর, মাথাভাঙ্গা, পাঁচআনী, নাউরী, হলদিয়া, লুধুয়া, একলাশপুর, জোড়খালী, শিকিরচর, ছেঙ্গারচর, কেশাইরকান্দি, জীবগাঁও, পাঠান বাজার, ঝিনাইয়া, মরাদন, ইসলামাবাদ, অলিপুর, নয়াকান্দি, সুজাতপুর ঠাকুরচর, রুহিতার পাড়, বদুরপুর, বাগানবাড়ি, নিশ্চিন্তপুর, দুর্গাপুর, লবাইরকান্দি, ইসলামাবাদ, ফতেপুরসহ প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে রোপা আমন ধান ও শাক সবজি, বগি পাট, আখ, ফল ও কাঠ গাছের বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁ, ভাটিয়ালপুর, বালিথুবা, কড়ইতলী, চড় মথুরা-চড় কুমিরা ও ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকায় রোপা আমন ও মৎস্য খামার তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ফসলি জমিতে আবাদ করতে পারছে না।

দশানী-হানিরপাড়-বালুরচর-ছেঙ্গারচর বাজার হয়ে যে খালটি কালিপুর পাম্প হাউজে মিলেছে সে খালটি এখন মানুষের দখলে, কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনায় খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এ খালটি দিয়ে পানি নিষ্কাশন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে দশানী, মাথাভাঙ্গা, হানিরপাড়, জোড়খালী, বালুরচর, মিলারচর এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর এ এলাকার কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এ বছর চাঁদপুর জেলায় রোপা আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে ২২ হাজার ৪০ হেক্টর। তার মধ্যে মতলব উত্তর ৬ হাজার ৯শ' ৭০ হেক্টর, মতলব দক্ষিণ ৪৫ হেক্টর, ফরিদগঞ্জ ৮ হাজার ১৫ হেক্টর, শাহরাস্তি ৬৩০ হেক্টর, কচুয়া ২ হাজার ৩৯০ হেক্টর, চাঁদপুর সদর ২ হাজার ২০ হেক্টর, হাইমচর ১ হাজার ৮৬০ হেক্টর, হাজীগঞ্জ ১০ হেক্টর। চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও মতলব দক্ষিণে নিচু এলাকা হওয়ায় রোপা আমন ধানের চাষ হুমকির মুখে রয়েছে এবং হাজীগঞ্জ সবচেয়ে নিচু এলাকা হওয়ায় রোপা ধানের চাষাবাদ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-সহকারী কৃষি কমর্কতা আঃ মান্নান মিয়া জানান, চাঁদপুরে ২২ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে, তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাঁ সেচ প্রকল্পগুলোতে জলাবদ্ধতা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে। আর পানি নিষ্কাশনের জন্যে উপজেলাওয়ারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্প বিভাগ মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প ও চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকায় পানি বেশি দেখা দিলে বা কম হলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত