প্রিয়তির ঈদ শুভেচ্ছা

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০১৬, ১২:০৬

মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ তরুণী একজন প্রশিক্ষিত পাইলট। প্রবাসে থাকলেও মন কাঁদে দেশের জন্য। দেশের আনন্দ উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয় সবার সাথে আবার বিপদের সময় উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন আর সবার মতই। মিস আয়ারল্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেলেও পরবর্তীতে অর্জন করেন মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল খেতাব। নিজের কাজ ও অর্জনের শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন সেক্টরে।

গুলশানের জঙ্গি হামলার শুরু থেকেই আমার আর লেখনিতে দেখেছি স্বদেশের প্রতি কতটা ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। এর মাঝের প্রিয় দেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।

হ্যাঁ, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হয়েছে, এই প্রথম হয়েছে। তার জন্য কি বাংলাদেশের মানুষ গুলো কম কষ্ট পেয়েছে? প্রতিটা মানুষ মানসিক ভাবে ভেঙেছে, অস্থির মন উত্তর খুঁজছে প্রতি নিয়ত। অশান্ত মন রাগে, ক্ষোভে, কষ্টে কারণে/ অকারণে একে অপরের তিরস্কার করে মনকে বুঝাবার চেষ্টা করছে,শান্ত করার চেষ্টা করছে। 

কিন্তু মন কি আর মানে বা শোনে ? শোনে না … ২/৩ রাত ধরে না ঘুমিয়ে টিভি এর দিকে তাকিয়ে আছে খবর দেখার জন্য, খবর পড়ছে আপডেট জানার জন্য, কি হয় কি হয়, বাঁচল কি না সবাই। যে যার সৃষ্টি কর্তাকে ডেকে দোয়া করছে। কি আর করার ছিল তাছাড়া, কারণ সাধারণ মানুষের ক্ষমতা সীমিত, চাইলেই কিছু করতে পারে না, শুধু আছে বুক ভরা মায়া, আর সেই মায়া নিয়ে তাকিয়ে ছিল দেশের সামরিক- বাহিনীর উপর, যে ওরা কিছু কখন করবে। 

হ্যাঁ, ওরা সাথে সাথে কিছু করতে পারেনি কারণ যেকোনো কিছু বা অপারেশন এর আগে কিছু প্রস্তুতি লাগে, কারণ এইটা কোন দেশ বাঁচানোর যুদ্ধ ছিল না যে, যে যেভাবে ছিল যুদ্ধে হাতিয়ার নিয়ে নেমে যাবে। এইখানে তাদের ভাবতে হয়েছিলো, আশে-পাশে মানুষের নিরাপত্তা, জানতে হয়েছিলো ঐ রেস্টুরেন্ট এর পুরো নকশা, প্ল্যান করতে হয়েছিলো আর কোন কোন দিক থেকে হামলা হওয়ার সম্ভাবনা কি এবং শত্রু পক্ষেরও প্রস্তুতি কি কি থাকতে পারে। যদিও আমার জ্ঞান এই ব্যাপারে সীমিত। যতটুকু বুঝেছি ততখানি বলেছি। 

কিছু সংখ্যক বলা-বলি করছেন বিদেশীরা আর আসবেনা বাংলাদেশে, ক্ষতি হয়েছে অনেক সেক্টর এ। 

বিদেশীরা এই বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে বাণিজ্য করতে এসেই ২০০ বছর কাটিয়ে দিল, বিদেশীরা এসেছিল, আসছে, আসতেই থাকবে। কিছু কিছু দুর্ঘটনার জন্য বিজনেস বন্ধ হবে না। হ্যাঁ, আসা হয়তো বন্ধ হতো কিছুটা যদি কেউ হলি-ডে তে আসতো। আমাদের মাঝে কিছু মানুষ এই অপ-প্রচার বন্ধ করে দিলে সারা বিশ্বতে তার প্রভাব কম পরবে। সারা বিশ্ব জুড়ে একের পর এক জঙ্গি হামলা হচ্ছে কিন্তু সেই সব দেশ কি থেমে আছে। প্রতিবেশি দেশে দেখলে দেখা যাবে, মুম্বাই ট্রেজেডি এর পর এখনও মুম্বাই জুড়ে বিদেশী দেখা যায়। 

যেকোনো দুর্ঘটনা/হামলা তে ভয় সাময়িকভাবে শুধু বিদেশী কেন, সবার মাঝেই থাকে। কিন্তু সেই ভয়কে কাটিয়ে, সচেতন হয়ে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে, সাবধানতার সাথে এই জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে হবে। ভয়কে দূরে ঠেলে, বিশ্বাসকে আবার শক্ত করে স্থাপন করতে হবে এবং যেকোনো কঠিন সময়ে কোন ধরনের মিথ্যা ও নেগেটিভ প্রচারণা না করে, শক্ত মনোবলে মোকাবেলা করতে হবে। সচেতন, সতর্ক আর দৃষ্টি থাকুন আপনার পাশের মানুষটির চলা- ফেরাতে। 

দুঃখ, বেদনা, ভেদাভেদ ভুলে সবার ঈদ যেন নিরাপদে ও আনন্দে কাটে এই কামনায় ‘মিস আর্থ ইন্টারন্যাশনাল’ এর পক্ষ থেকে "ঈদ মোবারক"!

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত