সিরি ‘আ’ লিগ

অতিরিক্ত সময়ের গোলে শিরোপার কাছে মিলান, বাঁধা ইন্টার

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১৯:২৯

সাহস ডেস্ক

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ, ম্যাচ চলছে যোগ করা সময়ে। অতিরিক্ত ৪ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। চলছে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট। বল তখন মিলানের ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড আনতে রেবিচের পায়ে। আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সের উদ্দেশে ক্রস করলেন তিনি। হেড করে বলটা ক্লিয়ার করতে গিয়েও পুরোপুরি পারলেন না ইতালিয়ান সেন্টারব্যাক ফ্রান্সেসকো আসেরবি। বল চলে গেল সামনে থাকা ইব্রাহিমোভিচের কাছে। ইব্রাহিমোভিচ হেড করে বল পাঠালেন মাঝে থাকা ইতালিয়ান মিডফিল্ডার সান্দ্রো তোনালির কাছে। তার ডান পায়ের হালকা টোকায় বল জালে জড়ালেই উচ্ছাসে মাতে এসি মিলান।

ম্যাচটি ড্র হলে লিগ শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় পড়তে হতো দলকে। তবে কাঁপতে থাকা এসি মিলান প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত রচনা করে সেই গোলের মাধ্যমেই পকেটে পুরল পুরো ৩ পয়েন্ট। সঙ্গে নিশ্চিত করল, নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার মিলানের সঙ্গে শিরোপার লড়াইয়ে এখনই অন্তত পিছিয়ে পড়ছে না। রবিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সিরি ‘আ’ লিগের ম্যাচে যোগ করা সময়ের গোলে লাৎসিওকে তাদেরই মাঠে ২-১ গোলে হারিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল এসি মিলান।

ইতালিয়ান লিগ শিরোপা-লড়াইয়ে এবার দুই মিলানের সুপ্রাচীন রেষারেষি সামনে তুলে এনেছে। দুই মিলানের এই লড়াই আজকের নয়। লিগের পয়েন্ট তালিকার ওপরের দিকে দুই মিলানের এই লড়াই এ শতাব্দীর শুরুর দশকে নিয়মিত দেখা যেত। লড়াইয়ে জুভেন্টাস থাকলেও দুই মিলান ছেড়ে কথা কইত না। অবস্থার পরিবর্তন আসে গত দশকে, যখন জুভেন্টাসের একাধিপত্যের সঙ্গে দুই মিলানের ফর্মহীনতা মিলিয়ে লিগ শিরোপাটা তুরিনের বুড়িদের একরকম একক সম্পত্তি হয়ে যায়।

দুই বছর ধরে অন্তত সে কথা বলা যাচ্ছে না। গত বছর শিরোপা জিতেছিল ইন্টার, দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফুটবলপ্রেমীদের মিলান শহরের ফুটবলীয় শ্রেষ্ঠত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল এসি মিলান। এবারও তাই। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে দুই মিলান। ঠিক যেন সেই আগের সময়গুলোর মতো!

এদিন শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে মিলান। ম্যাচের চার মিনিটেই প্রতিপক্ষ ডি-বক্সে আদর্শ স্ট্রাইকারের মুভমেন্ট দেখিয়ে লাৎসিওকে এগিয়ে দেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলে। পরে প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলে এই ১-০ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে যায় মিলান।

বিরতি থেকে ফিরেই গোলটি শোধ করে দেয় মিলান। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড রাফায়েল লিয়াওয়ের পাসে গোল করে মিলানকে সমতায় ফেরান ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরুড। এতে ১-১ গোলে সমতায় ফেরে মিলান। প্রথমার্ধে যেভাবে খেলছিল ইব্রা বাহিনরীরা, তাতে সমর্থকদের মনে জয় নিয়ে দ্বিধাও সৃষ্টি হয়েছিল। পরে সে দ্বিধা দূর করে দিলেন জিরুড।

পরে ৯০ মিনিট পর্যন্ত সমতা নিয়েই খেলতে থাকে দুই দল। তখন মনে হচ্ছিল ড্রই হবে। ড্র হলে ইন্টার মিলানের কাছ থেকে শিরোপা জয়ে শঙ্কায় পড়তে হতো মিলানকে। ড্রই মনে হচ্ছিল ম্যাচের একমাত্র নিয়তি। কিন্তু না, দলের ত্রাতা হয়ে হাজির হলেন তোনালি। ম্যাচের যোগ করা সময়ে অর্থাৎ ৯০+২ মিনিটের সময়ে ইব্রাহিমোভিচের হেড থেকে পাওয়া বল ডান পারের আলতো টোকায় ভাগ্য ঘুরে যায় মিলানের। এতে ইন্টার মিলানকে হটিয়ে শীর্ষে উঠে যায় এসি মিলান।

এই জয়ে ৩৪ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে এসি মিলান। এক ম্যাচ কম খেলা ইন্টার মিলান ২ পয়েন্ট কম নিয়ে অর্থাৎ ৭২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়তে নেমে গেছে ইন্টার মিলান। ৩৪ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়তে আছে নাপোলি। ৩৩ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে জুভেন্টাস। ৩৪ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৭ম স্থানে আছে লাৎসিও।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত