বাজেটে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যাশিত বরাদ্দ আসেনি: সিপিডি

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২১, ১৬:১৭

সাহস ডেস্ক

কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে বাজেট পেশ করা হয়েছে উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, সামষ্টিক অর্থনীতির কাঠামোটা বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের কোনো মিল নেই। শুক্রবার (৪ জুন) ‘জাতীয় বাজেট ২০২১-২২ সিপিডির পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এমন অভিমত দেয়া হয়।

সিপিডি বলেছে, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় স্বাস্থ্য, কৃষি ও কর্মসংস্থান খাতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কিন্তু, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যাশিত বরাদ্দ আসেনি।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, বলা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাব। কিন্তু এখানে কী ধরনের সংস্কার দরকার, কী ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা দরকার এবং কীভাবে করবো, সেটার কোনো সঠিক ও স্বচ্ছ রূপরেখা বাজেটে নেই।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজটে কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা ও চিন্তার স্বচ্ছতা ছিল না। এই বছরে আমরা দেখলাম কোভিড ব্যবস্থানা নিয়ে বাজেট ডকুমেন্টে চিন্তার একটা স্বচ্ছতা রয়েছে। কিন্তু সেই চিন্তার স্বচ্ছতার সঙ্গে বরাদ্দ কিংবা পদক্ষেপের কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে যদিও অনেক কিছু বলা হয়েছে এবং বলা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার একটি বাজেট। সেই ধরনের কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখেছি না। স্বাস্থ্য, কৃষি, কর্মসংস্থান এই তিনটিকে এডিপিতে প্রাধিকার দেয়া কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু সেই প্রাধিকারটা আমরা বরাদ্দের ক্ষেত্রে দেখছি না।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রশ্ন আসবে বাস্তবায়ন সক্ষমতার দিকে বাজেটে কী পরিবর্তন হলো। যাতে আমি ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করতে পারি। সেটা রাজস্ব আদায় বলি আর সরকারি ব্যয় বলি। কিন্তু ৮-৯ শতাংশ বাড়ালে মনে হয় এটা গতানুগতিক। তারপরে মূদ্রাস্ফীতি আছে এটা হয়ে যাবে। আমরা সেই জায়গা থেকে বলছি যে, বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে যে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। সরকার প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে বাস্তবে তার চেয়ে আরও বেশি প্রবৃদ্ধি করতে হবে। এটা করতে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, সক্ষমতা দরকার। সেটা কিন্তু আমরা গত কয়েক বছরে দেখিনি। এই করোনাকালেও সেটা হয়ে যাবে আমরা মনে করি না। সেই দিক থেকে আমরা বলছি একটা কাঠামোগত দুর্বলতা নিয়ে বাজেট পেশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাজেটে কাঠামোগত দুর্বলতার কথা আমরা বলছি। দুর্বলতাটা এখানে যে, সংশোধিত বাজেট ২০২১ অর্থবছরে ছিল সেটার ওপর বেসিস করে প্রবৃদ্ধিগুলো করেছেন। যেমন ২০২১ সালের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ওপর বেসিস করে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করা হয়েছে। দশ মাসের হিসাবে আমরা যেটা দেখছি আমদানি, রপ্তানি, রাজস্ব সরকারি ব্যয় বাকি দুই মাসে কত পারেন সেটা যদি দেখি তাহলে সংশোধিত বাজেটের চেয়ে কম হবে। তাহলে প্রবৃদ্ধির মাত্রাটা আবারও ২৫-৩০ শতাংশে চলে গেলো।

তিনি আরও বলেন, আমরা সারা বছর বললাম নতুন দরিদ্রের কথা। উপ্রান্তিক থেকে প্রান্তিক হয়ে গেছে এবং প্রান্তিক তোষ্য প্রান্তিক হয়ে গেছে। নতুন করে কর্মহীন হয়ে গেছেন। পরবর্তীতে যারা কাজ পেয়েছেন তারা অনেকেই সেবাখাত থেকে গ্রামে গেছেন। তাদের আয় কমে গেছে। সুতরাং কর্মসংস্থানে তেমন পরিবর্তন না হলেও আয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত