সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
প্রকাশ : ১০ মে ২০২১, ০৪:১৪
![](https://www.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2021/05/10/image-70713.jpg)
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্য বাড়ানোর নামে গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট করেছেন ছয় সংগঠন ও এক ব্যক্তি। রবিবার (৯ মে) ওই ৬ সংগঠন ও এক ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী সংগঠন ও ব্যক্তি হলেন- বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফরমস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), নিজেরা করি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী ১৯ মে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। এর আগে গত ৬ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সৌন্দর্য বাড়ানোর নামে গাছ কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠান তারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব না পেয়ে এ রিট দায়ের করা হয়।
এদিকে, আদালতের আদেশ অমান্য করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রেস্টুরেন্ট স্থাপনের জন্য গাছ কাটায় সরকারের এক সচিবসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ আবেদন করেছেন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করলে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে আদেশ দেন।
আদেশে আদালত এক বা একাধিক কমিটি গঠন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। সেগুলো হলো-
১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণের স্থান।
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের স্থান।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান।
১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের স্থান এবং স্মৃতিফলক/জয় স্থাপনা ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিদ্যমান সব ধরনের স্থাপনা অপসারণ করে কমিটির চিহ্নিত স্থানগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও বিবেচনাপ্রসূত দৃষ্টিনন্দন ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও সংরক্ষণ, তবে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখের আগের কোনো স্থাপনা এবং বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত স্মারক, ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক বা জয় এই আদেশের আওতাবহির্ভূত হবে। অন্যসব স্থাপনা ব্যতিক্রমহীনভাবে অবিলম্বে অপসারণ করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেস্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন মনজিল মোরসেদ।