নীতির প্রশ্নে আপস নাই: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:২৫

সাহস ডেস্ক

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আটক আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মু্ক্তির দাবিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বক্তব্য-বিবৃতির বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নীতির প্রশ্নে আপস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা।’

শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা দেশে-বিদেশে সবার মাথায় রাখা উচিত– আমি স্কুলজীবন থেকে রাজনীতি করি। বৈরী পরিবেশে, আইয়্যুব খানের আমল, আইয়্যুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলো। আমাদের বইয়ে একটা চ্যাপ্টার ছিলো, পাকিস্তান চ্যাপ্টার। ২০ নম্বর। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছি ওই ২০ নম্বর বাদ দিয়ে। কারণ আইয়্যুব খানের প্রশংসা আমার হাত দিয়ে আমি লিখবো না। আমি সেই মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘আমার ওই ২০ নম্বরের জন্য ফেলও করতে পারতাম বা থার্ড ডিভিশনও পেতে পারতাম। কিন্তু আমি তা পরোয়া করিনি। নীতির প্রশ্নে আপোস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবেই রাজনীতি শুরু করেছেন তিনি। আর দলের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দেশে ফেরার পর নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন দিয়েছেন। আর তার পাশে থেকে নিভৃতে সংসার, দল ও দেশের জন্য কাজ করে গেছেন তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তাঁদের কাছ থেকেই মানুষের জন্য কাজ করার রাজনীতি শিখেছেন।

কারও নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট শিশুরা– একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিলো, রাস্তায় নেমেছে- ওই শিশুদের যে ক্ষোভ, বিক্ষোভ, তাদের যে বিক্ষুব্ধ মন সেটাকে কাজে লাগিয়ে, ছোট ছোট শিশুদের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য একদল নেমে পড়লো।’

‘এদের মধ্যে অনেকেই খুব জ্ঞানী, গুণী, অনেকে আতেঁল, অনেকে একেবারে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খ্যাতিসম্পন্নরা কী করেছে – ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি। আর তারই সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিভিন্ন জায়গায় তারা অপপ্রচার চালালো। মিথ্যা কথা বলে বলে মানুষকে উসকানি দেওয়া, তাদের এই উসকানির কারণে কতো শিশুর জীবন যেতে পারতো, কতো শিশুর ক্ষতি হতে পারতো, সেটা তারা একবারও চিন্তা করেনি। বরং শিশুদের বিক্ষুদ্ধ মনকে ব্যবহার করে নিজেরা ফায়দা লুটতে চেয়েছিলো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্য। এখনো কতগুলো প্রেতাত্মা ঘুরে বেড়ায়। যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি, যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতায় ছিল, আর পঁচাত্তরের পরে তারা মাথাচাড়া দিয়ে আরো দ্বিগুণ উৎসাহে উঠল। এবং তাদের সেই সহযোগীরা এখনো শেষ হয়নি। ছোট্ট শিশুরা, একটা অ্যাক্সিডেন্ট ঘটেছে, রাস্তায় নেমেছে। ওই শিশুদের ঘাড়ে পাড়া দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য একদল নেমে পড়ল। এদের মধ্যে অনেকেই খুব জ্ঞানী-গুণী। অনেকেই আঁতেল, অনেকেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। এবং তাদের উসকানির কারণে কত শিশুর জীবন যেতে পারত! আর তাদের বিরুদ্ধেই যখনই ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারিদিকে যেন হাহাকার। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন চাপ। একটা কথা, দেশে-বিদেশের সকলের মাথায় রাখা উচিত, নীতির প্রশ্নে আপস নাই।’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত