দ্য ইকারিয়া ওয়ে

যে দ্বীপের মানুষ বেঁচে থাকেন ১০০ বছর পর্যন্ত

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪, ১৭:১১

Desk Report

পৃথিবীর যে কয়েকটি স্থানের বাসিন্দারা দীর্ঘ জীবন লাভ করেন, গড় আয়ুর বিচারে সেখানকার জনগোষ্ঠী তার অন্যতম। প্রকৃতপক্ষে এক তৃতীয়াংশ ইকারিয়ান ৯০ বছরের বেশি বেঁচে থাকেন।

দ্য ইকারিয়া ওয়ে বিশ্বের পাঁচ 'বস্নু জোন' এর একটি। 'বস্নু জোন' বলতে সেসব অঞ্চল বোঝায় যেখানকার মানুষের মধ্যে শতবর্ষী হওয়ার হার উলেস্নখযোগ্যভাবে বেশি। এজিয়ান সাগরের পূর্ব অংশের গ্রিকের ছোট দ্বীপটির স্থায়ী বাসিন্দা আট হাজারের কিছু বেশি।

দৃঢ় সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং প্রয়োজন মাফিক ঘুম ইত্যাদি এই দ্বীপের বাসিন্দাদের শতবর্ষী হওয়ার কারণ বলে মনে করা হয়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হলো, তাদের খাদ্যাভ্যাস। অর্থাৎ তারা কী ধরনের খাবার গ্রহণ করে। মেডিটারেনিয়ান ডায়েট বা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর হিসেবে সুপরিচিত। এই ডায়েটের সঙ্গে মিল আছে ইকারিয়া ডায়েটের। এতেও স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রচুর আঁশ বা ফাইবার এবং পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার অন্তর্ভুক্ত থাকে।

এই খাদ্যাভ্যাস ব্যাপকভাবে উদ্ভিজ্জ নির্ভর। বাদাম, আলু, লেবু, শাকসবজি, শস্য ও বীজের আধিক্য থাকে সেখানে। ফ্যাট বা চর্বির প্রধান উৎস হিসেবে থাকে জলপাই তেল। দই, পনির, মাছ, পোল্ট্রি ও রেড ওয়াইন পরিমিত খাওয়া হয়। লাল মাংস খাওয়া হয় খুবই সীমিত পরিমাণে, মাসে কয়েকবার।

ডায়ান কোচিলাস নামে একজন গ্রিক-আমেরিকান শেফ সম্প্রতি একটি রান্নার বই লিখেছেন। নাম দ্য ইকারিয়া ওয়ে। শেফ ডায়ান কোচিলাস তার এই নতুন বইয়ে দ্বীপটির বাসিন্দাদের খাবারের আলোকে একটি ‘প্ল্যান’ দিয়েছেন। যারা নিজেদের পাতে মেডিটারেনিয়ান ঘরানা নিয়ে আসতে চান তাদের জন্য এই পরামর্শ।

বইটি দুটি প্রশ্নে আলোকপাত করে : কিভাবে ‘মনকে কষ্ট না দিয়েও’ শরীরকে ভালো রাখা যায় এবং রান্নাটা কিভাবে করতে হবে। প্রশ্নগুলোর উত্তর তিনি খুঁজেছেন প্রশান্তি ও স্বস্তিদায়িনী দ্বীপটির সরল ও মৃদুগতির জীবনের অনুপ্রেরণায়। যেখানে মানুষে মানুষে বন্ধন গড়ে ওঠে খাবার টেবিলকে ঘিরে। নানান রকম খাবারের কথা বলা হয়েছে বইয়ে। এতে দই, শসা ও আখরোট স্যুপের মতো হালকা খাবার, স্ন্যাকস, বড় বা মাঝারি লোকসমাগমের ডিনারের রেসিপি যেমন মিলবে তেমনি পাওয়া যাবে পনিরে ভাজা পিচ এবং আরগুলা সালাদ; রেড ওয়াইনে ভাজা মশলাদার মটরশুটি; পেস্তা-কিসমিসের পোলাওয়ের মত পদ।

দ্য ইকারিয়া ওয়েতে শিমজাতীয় খাদ্যের জয়জয়কার। যত পদের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে, এগুলোকে কোচিলাস বিশেষ স্থান দিয়েছেন। উদাহরণ হিসেব দুয়েকটির কথা বলা যায় – মটরশুটি, তাহিনি (এক ধরনের তিল বাটা) এবং দই; ফাভা বিন (বিশেষ জাতের শিমের বিচি) স্টু; মরিচ দিয়ে কিডনি বিন; হলুদ, মৌরি ও লেটুসসহ ক্যারামেলাইজড জাম্বো বিন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত