রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে চলছে টিকাদান কর্মসূচী
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৫৩
![](https://www.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2021/01/28/image-67978.jpg)
রাজধানী ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯’র টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিএসএমএমইউয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) প্রশান্ত কুমার মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, উপাচার্যের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক টিকা নেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান এবং তথ্য সচিব খাজা মিয়া টিকা নেন।
পাঁচটি হাসপাতাল হলো- ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম দিনেই চিকিৎসক, নার্স ও বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ১০০ জন টিকা নিয়েছেন বলে জানান পিআরও প্রশান্ত। সবমিলিয়ে এই হাসপাতালগুলোতে আজ প্রায় পাঁচ শ জনকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তারা সবাই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মী।
জানা গেছে, বিএসএমএমইউতে ২০০ জন, ঢামেকে ১০০ জন, মুগদা হাসপাতালে ৬০ জন, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ১০০ জন ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ৬০ জনকে আজ টিকা দেওয়া হবে। আজকে টিকা নেওয়া সবাইকে আগামী সাত দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর আগামী ৭ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বুধবার বহুল কাঙ্ক্ষিত কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
এদিকে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাদের কী পরিমাণ কোভিড-১৯ টিকা দেয়া হবে তা বুধবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর (টাঙ্গাইল-৬) এক প্রশ্নের জবাবে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
পরিসংখ্যান অনুসারে, সম্ভাব্য টিকা গ্রহণকারীরা হলেন ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীর সবাই এবং ৬ লাখ বেসরকারি স্বাস্থ্য কর্মী (অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের), যারা সরাসরি কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত আছেন।
সেই সাথে অগ্রাধিকারের তালিকায় ২ লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন সদস্য, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যম কর্মী, ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, ৫ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি এবং জরুরি সেবার (পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবহন) ৪ লাখ কর্মী রয়েছেন।
এছাড়া স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের দেড় লাখ কর্মী, ১ লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক, জেলা ও উপজেলায় কর্মরত ৪ লাখ জরুরি সেবার সরকারি কর্মচারী, ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার (যক্ষ্মা, এইডস, ক্যান্সার) ৬ লাখ ২৫ হাজার জনগোষ্ঠী, ৬৪ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ১ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮ জন্য ব্যক্তি, ৮০ বছর ও তদূর্ধ্ব ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন জনগোষ্ঠী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ২১ হাজার ৮৬৩ জন এবং বাফার, ইমার্জেন্সি ও প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ১ লাখ ৭০ হাজার নিয়োজিতের জন্য টিকা সংরক্ষণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভ্যাক্স সুবিধা থেকে বাংলাদেশ তার জনসংখ্যার ৩ কোটি ৪০ লাখ লোকের বা ২০ শতাংশের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকা পাবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা গ্রুপের (এসএজিই) নির্দেশিকা এবং দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে টিকা গ্রহণকারী অগ্রাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রথম পর্যায়ে টিকা বিতরণে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের মোট ১ কোটি ৫০ লাখ লোক (জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ) দুই ডোজ টিকা পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই টিকাগুলো দেশের ৬৪ জেলা ইপিআই স্টোর এবং ৪৮৩টি ইপিআই স্টোরে সংরক্ষণ করা হবে।