বিজিবি এখন জল-স্থল ও আকাশপথের সক্ষমতা অর্জন করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:২০
![](https://www.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2020/12/05/image-66744.jpg)
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-কে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজিবি এখন জলে, স্থলে ও আকাশপথে দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোতে ১৫ হাজার জনবল বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা তিন ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীরউত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবির ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে এসব কথা বলেন তিনি।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে নবীন সৈনিককদের শপথগ্রহণ ও কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
নবীন সৈনিকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সীমান্তে চোরাচালান রোধে তোমাদের পেশাগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সুশৃঙ্খল ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। তোমাদের সকলের কর্মজীবন সফল হোক সেই কামনা করছি।
তিনি বলেন, সেবা ও কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে এই বাহিনীর সদস্যরা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও একইভাবে জনকল্যাণমূলক কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হতে এবং বিজিবির মূলনীতির প্রতি নবীন সৈনিকদের গুরুত্ব আরোপের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আজকের দিনটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিডিআরের তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও অভিবাধন গ্রহণ করেছিলেন।
কালের পরিক্রমায় মুজিব জন্মশতবর্ষে একইদিন ও ক্ষণে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করতে পেরে প্রধানমন্ত্রী নিজেকে গর্বিত ও ধন্য মনে করেন। তিনি বিজিবির নবীন সৈনিকদের প্রদর্শিত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের নিদর্শন তুলে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদরদফতরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বিডিআরের তৃতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আজকে যারা নতুন বিডিআরে যোগদান করে শপথগ্রহণ করলা তাদের কাছে আমার কথা রইল- ঈমানের সাথে কাজ করো, সৎপথে থেকো, দেশকে ভালবাসো, ইনশাআল্লাহ বাংলার এই দুর্দিন বেশি দিন থাকবে না। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলা আমার সোনার বাংলা হবে। এই বিশ্বাস আমার আছে।
এবছর ১৪ জুন থেকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যঅন্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি)-সহ আরও ৬টি প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এতে বিজিটিসিঅ্যান্ডসিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া ৭৯১ জন রিক্রুট মধ্যে ৫৯০ জন পুরুষ এবং ২০১ জন নারী রিক্রুট রয়েছেন। এদিকে বাকি ৬টি প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের ১ হাজার ৭৩৩ জন রিক্রুট রয়েছেন।
দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আনুষ্ঠানিক সর্বমোট ২ হাজার ৫২৪ জন রিক্রুট (নারী-পুরুষ) শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের শুভ সূচনা করেছেন।
শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের অফিসার ইনচার্জ মেজর কাজী মনজুরুল ইসলাম। প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক বেগ আব্দুল্লাহ আল মাসুম।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে ৯৫তম রিক্রুট সৈনিকদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকষ রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকারী (বক্ষ নম্বর ৪৩১) রিক্রুট (জিডি) মো. খোকন মোল্লার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।