চীনা ক্ষেপণাস্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার হুমকি মার্কিন সেনা অধিনায়কের

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৯:১৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চীন যে তাইওয়ানের ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি চ্যালেঞ্জ করা উচিৎ। নইলে চীনের এধরনের সামরিক পদক্ষেপ ‘স্বাভাবিক ব্যাপার’ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি এটিকে এমন এক বিষয় বলে বর্ণনা করেন, যা সবাই জানে, কিন্তু যা নিয়ে কেউই কথা বলতে চায় না। মার্কিন সপ্তম নৌবহরের অধিনায়ক ভাইস এডমিরাল কার্ল টমাস তাইওয়ানের উপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন। 

স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের চারপাশে এমাসের শুরুতে চীন সামরিক মহড়া দেয়। তবে তাইওয়ানের ওপর দিয়ে এই মহড়ার সময় কোন ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে কিনা, সেটি বেইজিং নিশ্চিত করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এ মাসে তাইওয়ান সফরের পর ঐ অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তার এই উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সফর চীনকে সাংঘাতিক ক্ষুব্ধ করে, কারণ তারা তাইওয়ানকে নিজেদের দেশের অংশ বলে মনে করে।

ভাইস এডমিরাল টমাস যে মন্তব্য করেছেন, তাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ জাপানের ইউকোসুকায় অবস্থিত মার্কিন সপ্তম নৌবহর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অগ্রবর্তী নৌবহর। এই নৌবহরে ৫০ হতে ৭০টি জাহাজ এবং সাবমেরিন আছে। এশিয়ার এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি।

ভাইস এডমিরাল টমাস সিঙ্গাপুরে সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরণের তৎপরতাকে মোকাবেলা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাইওয়ানের ওপর দিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া খুবই দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজ। যদি আপনি এটি চ্যালেঞ্জ না করেন তাহলে দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলো যেভাবে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে, এটির অবস্থাও সেরকম দাঁড়াবে। তাদের এখন পুরোদস্তুর এমন সব সামরিক ঘাঁটি আছে সেগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র, রানওয়ে, হ্যাঙ্গার, রেডার থেকে শুরু করে গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র- সবই আছে।

তাইওয়ানের চারপাশের সাগরে যখন চীন সামরিক মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেখানে জাহাজ চলাচলের প্রধান রুট এবং আকাশ পথ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। তাইওয়ান এটিকে তাদের বিরুদ্ধে কার্যত এক ধরনের অবরোধ বলে বর্ণনা করেছিল। তাইওয়ান আরও অভিযোগ করেছিল যে, এটি আসলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর এক ধরনের প্রস্তুতি। তবে তাইওয়ান বলেছিল, চীন যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, সেগুলো বায়ুমণ্ডলের অনেক ওপর দিয়ে গেছে, ফলে তাদের জন্য কোন হুমকি সৃষ্টি করেনি। এই ক্ষেপণাস্ত্র কোন পথ ধরে গেছে, তা তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেনি।

অন্যদিকে ওয়াশিংটনের জাপানি দূতাবাস থেকে বলা হয়েছিল, তাদের বিশ্বাস চীনের নিক্ষেপ করা চারটি ক্ষেপণাস্ত্র তাইওয়ানের রাজধানী তাইপের ওপর দিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে তাদের সামরিক জাহাজ চলাচল বাড়িয়ে দিয়েছে। চীনের কাছে এই তাইওয়ান প্রণালী কৌশলগত-ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা এটিকে আন্তর্জাতিক জলসীমা বলে গণ্য করে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক থাকলেও তাইওয়ানের সঙ্গে নেই। তবে এই দ্বীপটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এক ধরণের বিশেষ সম্পর্ক বজায় রাখে। তারা তাইওয়ানকে প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নানা অস্ত্রশস্ত্র বিক্রি করে। চীন আবার এতে ভীষণ ক্ষুব্ধ। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বৈরিতা বেড়ে যাওয়ার পর তাইওয়ান হয়ে উঠেছে বিরোধের এক বড় কেন্দ্র। সূত্র: বিবিসি।

 

সাহস২৪.কম/টিআর/এসকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত